Friday, 26 September, 2025

টাঙ্গাইলে সরিষার ব্যাপক ফলন, স্বপ্ন দেখছেন কৃষক


টাঙাইলে সরিষার ব্যপক ফলন হয়েছে

চলতি মৌসুমে টাঙ্গাইলে সরিষার ব্যাপক ফলন হয়েছে। এতে গ্রামীণ অর্থনীতি দিন দিন বেগবান হচ্ছে। চলতি বছরে ইতিমধ্যেই লক্ষমাত্রার চেয়ে সরিষার আবাদ বেশি হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। টাঙাইলে সরিষার ব্যাপক ফলন হবার ফলে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।

কৃষি বিভাগের দাবি বারি-১৪ ও বারি-১৫ চাষেই বাম্পার ফলন

উচ্চ ফলনশীল ে-১৪ ও বারি-১৫ জাতের সরিষার চাষ করায় বাম্পার ফলন হয়েছে বলেই দাবি কৃষি বিভাগের।

আরো পড়ুন
ধানের বাম্পার ফলন: ফুল ফোটার সময় কৃষকের করণীয়

বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য ধান। এ দেশের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা এই ফসলের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল। ধানের ফলন বাড়াতে হলে এর Read more

ঢাকায় শুরু হলো আগ্রোফরেস্ট্রি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং গ্রামীণ জীবিকা উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী আঞ্চলিক বিশেষজ্ঞ বৈঠক। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) Read more

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায় চলতি মৌসুমে জেলায়  ৪৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫৪ হাজার ৮৪০ মেট্রিক টন সরিষা আবাদের।

মৌসুমের শুরুতে নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টির কারণে সরিষা আবাদে ঝুঁকি দেখা দেয়।

সরিষার চাষ বাড়াতে গঠন করা হয় সার্চ কমিটি

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস জানায়, সদর উপজেলায় ৫ হাজার ২৯০ হেক্টরে, বাসাইলে ৪ হাজার ৮২০ হেক্টরে, কালিহাতীতে ৩ হাজার ১৩০ হেক্টরে সরিষা আবাদ হয়।

অন্যদিকে ঘাটাইলে ২ হাজার ৩৫৫ হেক্টরে, নাগরপুরে ১০ হাজার ১০০ হেক্টরে, মির্জাপুরে ৮ হাজার ৯৫০ হেক্টরে, মধুপুরে ৪৬৫ হেক্টরে, ভূঞাপুরে ১ হাজার ৮৩০ হেক্টরে, গোপালপুরে ৩ হাজার ৬০০ হেক্টরে, সখীপুরে ২ হাজার ১৪০ হেক্টরে, দেলদুয়ারে ২ হাজার ৫৫০ হেক্টরে, ধনবাড়ী উপজেলায় ৪৭০ হেক্টরে আবাদ হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায় জেলায় সরিষার আবাদ বাড়ানোর লক্ষ্যে পাঁচ সদস্যের একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হয়।

জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার, অতিরিক্ত পরিচালক (শস্য), অতিরিক্ত পরিচালক (উদ্যান) এবং নিজ নিজ উপজেলা কৃষি অফিসার ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার নিয়ে এই সার্চ কমিটি গঠিত হয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্চ কমিটির তৎপরতা ও প্রণোদনার ফলে হাল জরিপে সরিষার আবাদ বেশি হয়েছে।

কৃষকরা জানায়, উচ্চ ফলনশীল জাতের বারি-১৪ ও বারি-১৫ এবং স্থানীয় জাতের (পেচি/টরি-৭) সরিষার আবাদ জেলায় বেশি হয়ে থাকে।

তাছাড়া বারি-৯, বিনা-৯/১০, সরিষা-১৫, সোনালি সরিষা (এসএস-৭৫) জাতের সরিষার আবাদও বেশি হয়।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সরিষা চাষে প্রতি বিঘা জমিতে ৪-৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়।

প্রতি বিঘা জমিতে ফলনের উপরে নির্ভর করে ১০-১২ হাজার টাকা লাভ করা যায়।

জমির পাশে বসানো হয়েছে মৌ বাক্স

জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, মাগুরা, নাটোর, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, পাবনা, নড়াইল ও সুন্দরবন এলাকা থেকে মৌচাষিরা সারি সারি মৌ বাক্স বসিয়ে সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করে থাকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সারি সারি মৌ বাক্স ক্ষেতের পাশে স্থাপন করা হয়েছে।

মৌচাষিরা জানান, সরিষার ফলন ভালো হবার কারণে জেলার বিভিন্ন এলাকায় মধু আহরণ ভালো হচ্ছে।

টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আহসানুল বাসার।

তিনি জানান, জেলার ১২টি উপজেলায় এবার ৫০ হাজার ৪৮৮ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মৌমাছির কারণে পরাগায়নে প্রায় ২০ শতাংশ ফলন বেশি হয়ে থাকে।

সরিষার বাজার ভালো থাকায় চাষিদের ও মৌ বাক্স স্থাপনকারীদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

0 comments on “টাঙ্গাইলে সরিষার ব্যাপক ফলন, স্বপ্ন দেখছেন কৃষক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ