
খরচ কম, রোগবালাই কম, আবার তেমন পরিচর্যার প্রয়োজনও পড়ে না—এই সহজ ব্যবস্থাপনার কারণেই ঝালকাঠিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তিল চাষ। স্থানীয় চাহিদার পাশাপাশি সারাদেশে তিলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাজারে মিলছে ভালো দাম। অন্য ফসলের তুলনায় তিনগুণ লাভজনক হওয়ায় দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের মাঝে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালে ঝালকাঠি জেলায় তিল চাষ হয়েছে ৩৯৬ হেক্টর জমিতে, যা আগের বছরের ৩৯২ হেক্টর থেকে কিছুটা বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে জেলার প্রত্যন্ত উপজেলা কাঠালিয়ায়। উপজেলাভিত্তিক চাষের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঝালকাঠি সদরে ৮৬ হেক্টর, নলছিটিতে ৩৫ হেক্টর, রাজাপুরে ১১০ হেক্টর এবং কাঠালিয়ায় ১৬৫ হেক্টর জমিতে তিল চাষ হয়েছে।
চাষিরা জানান, স্থানীয় জাত ছাড়াও বারি তিল-২, বারি তিল-৪ ও বিনা তিল-৩ জাতের তিল চাষে ভালো ফলন পাচ্ছেন তারা। বীজ বোনার পর মাত্র তিন মাসের মধ্যেই ফসল ঘরে তোলা যায়। অন্যান্য ফসলের মতো বেশি পরিচর্যার দরকার হয় না, রোগবালাইও কম। ফলে কীটনাশক কিংবা রাসায়নিক সারের ব্যবহারও খুব কম।
চাষি সালাম, আবু বকর, মাসুম ও জলিল সিকদার বলেন, তিল চাষে ঝামেলা নেই, খরচও কম। ফলে লাভ বেশি হয়। আগে যারা অন্য ফসল করতেন, তারাও এখন তিল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, “চলতি মৌসুমে জেলায় ৩৯৬ হেক্টর জমিতে তিল আবাদ হয়েছে। চাষিদের উৎসাহ দিতে কৃষি বিভাগ প্রদর্শনী প্লট, প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, সারাদেশে তিল চাষ সম্প্রসারিত হলে ভোজ্যতেল উৎপাদনে ঘাটতি অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব হবে।”
চাষিরা মনে করছেন, সরকারি সহায়তা ও বাজার ব্যবস্থাপনা ভালো থাকলে ভবিষ্যতে তিল চাষ ঝালকাঠির কৃষি অর্থনীতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।