Sunday, 16 November, 2025

চারা বিক্রি করে চারাগ্রাম, উপার্জনের প্রধান মাধ্যম


চারা গ্রামের নাম শুনেছেন?  কুমিল্লার বুড়িচংয়ে গোমতী নদীর পাড়ে অবস্থিত সমেষপুর গ্রাম। এই গ্রামটি চারা গ্রাম নামে স্থানীয়ভাবে পরিচিত। কারণ গাছের চারা বিক্রি এ গ্রামের মানুষের উপার্জনের প্রধান মাধ্যম। মানে হল চারা বিক্রি করে চারাগ্রাম, আয় করে তাদের জিবীকা।

গ্রাম এর বিভিন্ন স্থানে স্থানে ঘুরে জানা গেছে, মূলত প্রতিবছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এখানকার কৃষকদের ব্যস্ততা থাকে । উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, প্রতিবছর এই তিন মাসে গড়ে ৩ কোটি টাকার চারা বিক্রি হয় চারা গ্রাম থেকে।

এখন বেশ ব্যস্ত সমেষপুর গ্রামের কৃষকরা। এ বছরও চারা বিক্রির এই আনুমানিক লক্ষ্যমাত্রা ধরে রাখতেই তাদের এই ব্যস্ততা।

আরো পড়ুন
ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশের চিংড়ি রপ্তানি: সংকটের পর আশা!

টানা দুই বছর নিম্নমুখী থাকার পর অবশেষে দেশের হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে। একসময় প্রায় খাদের কিনারায় Read more

পেঁয়াজের বাজারে ফের অস্থিরতা: সপ্তাহেই দাম বাড়লো ২০-২৫ টাকা
পেঁয়াজের দামে হঠাৎ মৌসুম শেষের অস্থিরতা

চলতি বছর দেশীয় পেঁয়াজ প্রায় পুরোটা সময়ই বাজারের চাহিদা মিটিয়েছে। তবে প্রতিবারের মতো এবারও পেঁয়াজ মৌসুমের শেষ সময়ে এসে বাজারে Read more

সেখানকার বীজতলা তৈরি করা হয়েছে শীত আসার অনেক আগেই। এখন  টম্যাটো, মরিচ, বেগুন, ফুলকপি ও বাঁধাকপির চারা জমিগুলোতে শোভা পাচ্ছে।

চারার পরিচর্যায় ব্যস্ততার ফাঁকে একজন কৃষক জানান , ৮ শতক জমিতে বীজতলা তৈরি করেছেন তিনি। তার বীজতলায় অন্তত তিনবার চারা উৎপাদন হবে আশ্বিন থেকে অগ্রহায়ণ পর্যন্ত।

তিনি বলেন, প্রতিবার  ৮০ হাজার টাকা করে মোট ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা চারা উৎপাদনে খরচ হবে। এসকল খরচের মধ্যে আছে বীজতলা তৈরির জন্য বাঁশ, পলিথিন, কীটনাশক, সার ও শ্রমিকের মজুরি ইত্যাদি।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে তিনি আশা করছেন চারা বিক্রি করে সাড়ে ৩ লাখ টাকা উঠবে বলে।

চারা গ্রামে চারা কিনতে প্রতিদিনই কৃষকরা আসেন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে ।

তাদের একজন বলেন, সমেষপুরের চারা নিঃসন্দেহে অনেক ভালো, এক দশক ধরে তিনি  সমেষপুর থেকে চারা নিয়ে নিয়ে জমিতে রোপণ করে ভাল ফল পাচ্ছেন।

বুড়িচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আফরিনা আক্তার। তিনি বলেন, প্রতিবছর এখানে গড়ে ৪ হেক্টর জমিতে রবিশস্যের চারা উৎপাদন হয়,  মৌসুমে গড়ে ৩ কোটি টাকার চারা বিক্রি হয়।’

কৃষি বিভাগের প্রতি কৃষকদের অভিযোগ

কিন্তু  কৃষকদের অভিযোগ রয়েছে কৃষি বিভাগের প্রতি। চারা বিক্রির ওপর চলছে যে গ্রাম, কৃষি বিভাগের নজর নেই সে গ্রামের দিকে।

এক চাষি জানান যে তিনি ২০ শতক জমিতে বীজতলা তৈরি করেছেন। কিন্তু কোনো সহযোগিতা কৃষি বিভাগ থেকে পাননি।

কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন মিজানুর রহমান।  তিনি  জানান, সমেষপুরের কৃষক কৃষি বিভাগের কোনো সাপোর্ট না পেয়ে থাকলে সেটা অবশ্যই দুঃখজনক। তিনি কৃষকদের জন্য করণীয় সবকিছু করার ব্যবস্থা শুরু করবেন বলে আশ্বাস দেন।’

0 comments on “চারা বিক্রি করে চারাগ্রাম, উপার্জনের প্রধান মাধ্যম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ