তীব্র তাপপ্রবাহ হাঁস- মুরগি ও গবাদিপ্রাণির দেহে নানা ধরনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পীড়ন (স্ট্রেস) তৈরি করে, ফলে হাঁস-মুরগি ও গবাদিপ্রাণির উৎপাদন হ্রাস পায়, হজম শক্তি কমে যায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয় এবং গবাদিপ্রাণি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারাও যায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মৃদু (৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) থেকে মাঝারি (৩৮- ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) কিংবা কোথাও কোথাও তীব্র (৪০-৪২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) তাপপ্রবাহ চলমান আছে এবং আগামী কয়েক সপ্তাহ এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
এমতাবস্থায় হাঁস-মুরগি ও গবাদিপ্রাণির ওপর তাপপ্রবাহের প্রভাব কমাতে এবং তাপপ্রবাহজনিত পীড়ন (স্ট্রেস) সহনীয় করতে হাঁস-মুরগি ও গবাদিপ্রাণির খামারিদের নিম্নলিখিত ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে-
■ গবাদিপ্রাণি/পোলট্রি মুরগির ঘর ঠান্ডা রাখতে হবে। এজন্য শেডের চালে চট/বস্তা/কাপড় বিছিয়ে সময়ে সময়ে তাতে পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে।
গোয়াল ঘরেও ভেজা চট/বস্তা/কাপড় ঝুলিয়ে রাখলে তা তাপমাত্রা কমাতে সহায়তা করবে।
■ অতিরিক্ত গরমে প্রাণিদের পানিস্বল্পতারোধে পর্যাপ্ত ঠান্ডা ও পরিষ্কার পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
অতিরিক্ত গরমে ষাঁড় বা ব্রয়লার মুরগির মৃত্যুঝুঁকি আছে। সেজন্য এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে ও পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
■ মুরগি ও গবাদিপ্রাণির খাবার পানির সঙ্গে পরিমাণমতো লবণ, ভিটামিন সি/ইলেক্ট্রোলাইট/গ্লুকোজ ইত্যাদি মিশিয়ে দেওয়া হলে তা শরীরের ওপর তাপজনিত চাপ কমাবে।
■ দুধেল গাই বা ষাঁড়ের ঘরের ভেতরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে ফ্যান ব্যবহার করতে হবে।
■ গবাদিপ্রাণিকে দিনে একাধিকবার গোসল করানো অথবা পাইপের মাধ্যমে পানি ছিটিয়ে শরীর ভিজিয়ে দিতে হবে।
■ সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বন্ধ ঘরে বা খোলামাঠে গবাদিপ্রাণিকে না রেখে গাছের ছায়ায় রাখতে হবে। এ সময়ে ঘাস খেতে দিতে হবে।
■ গবাদিপ্রাণিকে খড় বা শক্ত আঁশযুক্ত খাবার কম দিয়ে কচি ঘাস বেশি দিতে হবে।
■দুধেল গাইকে রেডি ফিডের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে কম আঁশযুক্ত খাবার দিতে হবে।
■অতিরিক্ত তাপপ্রবাহের সময়ে খেতে না দিয়ে অপেক্ষাকৃত শীতল সময়ে খাবার দিতে হবে।
■ সম্ভব হলে মিনারেল মিক্সচার ব্লক/ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক সরবরাহ করতে হবে।
■ প্রচণ্ড গরমের মধ্যে কৃমিনাশক ব্যবহার, টিকাপ্রদান কিংবা গবাদিপ্রাণি পরিবহন পরিহার করতে হবে। দিনের অপেক্ষাকৃত শীতল সময়ে এ কাজগুলো করা যেতে পারে।
■ জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে ।