সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত একটি সভায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন কৃষকের দরজায় ঋণ নিয়ে যাবে ব্যাংক। ব্যাংকের শাখায় চালু করতে হবে কৃষি ঋণ বুথ। এনজিওর মাধ্যমে ঋণ বিতরণ কমাতে হবে। চলমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রান্তিক পর্যায়ে দরিদ্র কৃষকদের মাঝে কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ সহজ করতে ব্যাংক ও কৃষকদের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনতে করণীয় নির্ধারণে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে সরকার। বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) মাধ্যমে বেশি সুদে ঋণ বিতরণ কমিয়ে ব্যাংকগুলোকে সরাসরি ঋণ নিয়ে কৃষকের দরজায় যেতে বলেছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, সহজে কৃষকের কাছে ঋণ পৌঁছানো নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার ঋণ বিতরণে এনজিওগুলোর অংশগ্রহণ কমানোর জন্য অনেকগুলো নির্দেশনা দিয়েছে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো পালন করতে ব্যাংকগুলোকে বলেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, বেশির ভাগ বেসরকারি ব্যাংক সরাসরি ঋণ বিতরণ করে না বরং বিতরণের জন্য বেসরকারি সংস্থাকে (এনজিও) নিয়োগ করে। এনজিওর মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণের সুদ ২৪ শতাংশ পর্যন্ত। যেখানে ব্যাংকগুলো বিতরণ করছে ৮ শতাংশ সুদে।
এনজিওর মাধ্যমে ঋন বিতরন কমাতে হবে
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া এগ্রোবিডিকে বলেন, বর্তমানে বেসরকারি ব্যাংকগুলো তাদের কৃষি ঋণের ৭০ শতাংশ বিতরণ করে এনজিওর মাধ্যমে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যত দ্রুত সম্ভব বিতরণের হার ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছে।
সভায় অংশ নেওয়া ব্যাংকগুলোকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কৃষি ঋণ মেলার আয়োজন করতে বলা হয়েছে, যেখানে ব্যাংকার ও কৃষকরা অংশ নেবেন। কারণ, কৃষকরা মাঠে ব্যস্ত থাকেন এবং ব্যাংকে যাওয়ার জন্য তাদের সময় খুব কম। মেলায় অংশ নেওয়া ব্যাংকগুলো কৃষকদের মাঝে তাৎক্ষণিক আবেদনপত্র বিতরণ ও গ্রহণ এবং ঋণ অনুমোদন করবে। এ ছাড়াও সভায় কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগকে প্রতিটি উপজেলার কৃষকদের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কৃষি ঋণ নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোকে মোট ঋণের ২.১০ শতাংশ কৃষি খাতে বিতরণ করতে হবে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ ফসল, ১০ শতাংশ মাছ চাষ, ১০ শতাংশ পশুসম্পদ এবং ২০ শতাংশ অন্যান্য কৃষি উপখাতে বিতরণ করতে হবে।