চলতি অর্থবছরে কৃষি ঋণ বিতরণের কথা থাকলেও সে পরিমাণ কৃষি ঋণ বিতরিত হয়নি। বরং প্রথম দুই মাস (জুলাই-আগস্ট) কৃষিঋণ বিতরণ এক শতাংশের নীচে রয়েছে। বেসরকারি ও বৈদেশিক ১৫ ব্যাংকের কৃষি ঋণের বিতরণ প্রতিবেদন বলছে এই তথ্য। যদিও রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলো ১০ শতাংশের বেশি কৃষিঋণ বিতরণ করেছে একই সময়ে।
কৃষিঋণ প্রদানের কথা থাকলেও বেসরকারি ও বিদেশী ব্যাংকগুলো তা পূরণ করতে পারেনি
বাংলাদেশে ব্যাংকের তথ্য মতে জানা যায়, ২ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকার কৃষি ঋণ প্রদান করার কথা ছিল। এর বিপরীতে চলতি বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের চেয়ে ২২ শতাংশ কম ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো।
কৃষিখাত ব্যাংকিং মাধ্যম থেকে গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে ৩ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা পেয়েছিলো।
সিপিডি’র ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দেশের কৃষিখাত করোনার দুর্যোগময় মুহূর্তে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। গত বছর ব্যাংকগুলোর কৃষিঋণ বিতরণ সে তুলনায় ভালো ছিলো। তবে চলতি বছরে এই ঋণ বিতরণের হার কমে গেছে যদিও ঋণ বিতরণের সময় এখনও শেষ হয়ে যায়নি।
২০২০-২০২১ অর্থবছরে করোনাভাইরাসের প্রভাব ছিল বিস্তর। কিন্তু তাসত্ত্বেও অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণ সন্তোষজনক ছিলো। ব্যাংকগুলো দেশের অন্যান্য খাতে ঋণ বিতরণ করতে অনিচ্ছুক ছিলো মহামারিজনিত কারণে। বরং কৃষকদের আরও বেশি ঋণ বিতরণে আগ্রহী ছিলো ব্যাংকগুলো।
সরকার কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন
২০২১-২০২২ অর্থছরের জন্য ২৮ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। গত বছরের তুলনায় এটি ৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক ১১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা বিতরণ করবে। বাকি ১৭ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা বিতরণ করবে বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, বেসরকারি আটটি ও সাতটি বিদেশি ব্যাংক কৃষিঋণের এক শতাংশের বেশি বিতরণ করতে পারেনি চলতি অর্থবছরে। যাদের মধ্যে রয়েছে এবি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, এনআবি কমার্শিয়াল ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংক।
এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে- সিটি ব্যাংক এনএ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিল, হাবিব ব্যাংক, এইচএসবিসি ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং ওরি ব্যাংক।
চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা বিতরণ করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব আট ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, গতবছর কৃষিঋণ পেয়েছেন ৩০ দশমিক ৫৫ লাখ ক্ষুদ্র কৃষক ।
করোনা কালে পুঁজি হারিয়েছে অনেক প্রান্তিক কৃষক। সরকার চলতি অর্থবছরে কৃষকদের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকার নতুন আরেকটি প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করেছে অর্থনৈতিক এই সংকট মোকাবেলায়। যাতে কৃষকরা ৪ শতাংশ সুদে কোনো প্রকার জামানত ছাড়াই ঋণ পেতে পারেন।