![ককাটেল পাখি](https://i0.wp.com/agrobd24.com/wp-content/uploads/2025/02/%E0%A6%95%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%9F%E0%A7%87%E0%A6%B2-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%96%E0%A6%BF.jpg?resize=900%2C400&ssl=1)
ককাটেল পাখি (Cockatiel) বাসায় পালন করা বেশ সহজ এবং আনন্দদায়ক, তবে সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। নিচে ককাটেল পাখির সঠিক লালন-পালনের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো দেওয়া হলো—
১. খাঁচা নির্বাচন ও সেটআপ
খাঁচার আকার:
- ককাটেল পাখির জন্য কমপক্ষে ২৪×১৮×24 ইঞ্চির খাঁচা দরকার, যাতে তারা ডানা মেলতে পারে।
- যদি সম্ভব হয়, আরও বড় খাঁচা নির্বাচন করুন।
বারের ফাঁক:
- খাঁচার ফাঁক ½ ইঞ্চির (১.২ সেমি) বেশি হলে চলবে না, যাতে তারা বের হতে না পারে।
আবাসস্থলের ব্যবস্থা:
- কাঠ বা বাঁশের তৈরি কয়েকটি বসার কাঠি (Perch) রাখুন।
- পাখির খেলনা, দোলনা, মই, আয়না ইত্যাদি রাখতে পারেন, তবে বেশি নয়।
স্থান নির্বাচন:
- আলো-বাতাস চলাচল করে এমন স্থানে রাখুন।
- শব্দবহুল বা রান্নাঘরের ধোঁয়াযুক্ত জায়গায় রাখবেন না।
- রাতের ঘুমের জন্য শান্ত পরিবেশ নিশ্চিত করুন।
২. খাবার ও পানীয়
প্রধান খাদ্য:
- ককাটেলের জন্য বিভিন্ন ধরনের বীজ ও পেলেট খাবার উপযুক্ত।
- বাজারে পাওয়া যায় এমন “Cockatiel Seed Mix” বা “Bird Pellets” দিতে পারেন।
অতিরিক্ত খাবার:
- তাজা শাকসবজি ও ফল (গাজর, শসা, আপেল, কলা, আম) দিতে পারেন।
- মাঝে মাঝে সিদ্ধ ডিমের সাদা অংশ দেওয়া যেতে পারে।
যা খাওয়ানো যাবে না:
- অ্যাভোকাডো, চকোলেট, ক্যাফেইন, পেঁয়াজ, রসুন, লবণযুক্ত বা ভাজা খাবার পাখির জন্য বিষাক্ত।
পানির ব্যবস্থা:
- প্রতিদিন পরিষ্কার, ফিল্টার করা পানি দিন।
- পানির পাত্র প্রতিদিন পরিষ্কার করুন।
৩. যত্ন ও পরিচর্যা
স্নান:
- ককাটেল পাখি সাধারণত নিজে নিজেই গোসল করতে পছন্দ করে।
- সপ্তাহে ২-৩ বার স্প্রে বোতল দিয়ে হালকা পানি স্প্রে করুন।
পালক কাটা (যদি প্রয়োজন হয়):
- উড়তে না পারার জন্য কিছু মানুষ ডানার কিছু পালক কাটেন, তবে এটি পাখির জন্য কিছুটা কষ্টদায়ক হতে পারে।
নখ কাটা:
- যদি নখ বেশি বড় হয়ে যায়, তাহলে বিশেষ বার্ড নেল ক্লিপার দিয়ে কাটতে হবে।
সামাজিকতা ও প্রশিক্ষণ:
- ককাটেল মানুষের সংস্পর্শে থাকতে ভালোবাসে, তাই নিয়মিত তাদের সাথে সময় কাটান।
- শিস দেওয়া, কিছু শব্দ শেখানো এবং হাতে বসার প্রশিক্ষণ দিতে পারেন।
৪. স্বাস্থ্য সচেতনতা
সুস্থ পাখির লক্ষণ:
- খুশি হয়ে শিস দেওয়া ও গান গাওয়া।
- চকচকে পালক ও উজ্জ্বল চোখ।
- নিয়মিত খাবার খাওয়া ও পানি পান করা।
অসুস্থতার লক্ষণ:
- খাবার খেতে না চাওয়া, নিস্তেজ হয়ে থাকা।
- ডায়রিয়া বা বিষণ্ণতা।
- পালক ঝরে যাওয়া বা শরীর ফুলিয়ে রাখা।
➡ এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত পাখির ডাক্তার (Avian Vet) এর পরামর্শ নিন।
৫. প্রজনন ও ডিম দেওয়ার ব্যবস্থা
বয়স ও জোড়া নির্বাচন:
- ককাটেল পাখি সাধারণত ৮-১২ মাস বয়সে প্রজননে সক্ষম হয়।
- সুস্থ ও মিলনসক্ষম একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী পাখি জোড়া দিন।
বাসা তৈরি:
- খাঁচার মধ্যে একটি কাঠের বাসা (Nest Box) দিতে হবে।
- বাসার ভেতরে কাঠের গুঁড়া বা ছোট ঘাস রাখুন।
ডিম ও বাচ্চা:
- স্ত্রী ককাটেল প্রতি ক্লাচে ৩-৭টি ডিম পাড়ে এবং ১৮-২১ দিন তা দেয়।
- বাচ্চা জন্মের পর নরম খাবার (ভেজানো ব্রেড, সিদ্ধ ডিম) দিতে হবে।
সংক্ষেপে:
- বড় খাঁচা, নিরাপদ পরিবেশ ও সুষম খাবার দিন।
- নিয়মিত যত্ন নিন, স্নান করান ও সামাজিকতা বজায় রাখুন।
- অসুস্থ হলে পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- প্রজননের জন্য আলাদা বাসার ব্যবস্থা করুন।
আপনার যদি কোনো নির্দিষ্ট প্রশ্ন থাকে, জানাতে পারেন!