ঔষধি গাছের কথা আমাদের চারপাশে কত যে আছে তা বলে শেষ করা যাবে না। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ তার আশেপাশে থাকা গাছপালা বা তরুলতা নানা ঔষধি কাজে ব্যপক ব্যবহার করে আসছে। বিশেষ করে এসব গাছ-গাছড়ার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে আয়ুর্বেদিক ও ইউনানি ওষুধের ক্ষেত্রে । গবেষণায়ও ব্যবহার হয় এই সকল গাছ গাছড়া।
আমাদের দেশের গবেষকরা জানিয়েছেন, আমাদের চারদিকে থাকা অনেক ঝোপ, লতা-পাতা ও গাছের ব্যপক ঔষধি গুণ রয়েছে। আমাদের গ্রামে গঞ্জে এখনো মানুষজন এগুলো প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু গবেষনা না হওয়ায় এদের গুণাগুণ সম্পর্কে জানা যায় নি। বর্তমানে বিভিন্ন গবেষক তাদের গবেষণায় এগুলোর নানা গুণাগুণ এর প্রমান পেয়েছেন।
তেমনি একটি গাছের নাম মেন্দা।দেশিয় এর অনেক নাম রয়েছে- কুকুরচিতা, কারজুকি, রতন, খারাজুরা, ফটেক্কা ইত্যাদি। আমরা সকলেই এই গাছ দেখি কিন্তু নাম জানি না। এটি একটি চির সবুজ বৃক্ষ। এর আকার মাঝারি। উচ্চতা নূন্যতম ৫ মিটার হয়। সর্বোচ্চ উচ্চতায় এটি ১৮-২০ মিটার অবধি হতে পারে। এর পাতা গুচ্ছাকার। ফুলগুলো হয় হলুদাভ- সাদা রঙের। কখনো কখনো নীল রঙের ফুলও দেখা যায়। এর ফল হয়। ফল গোলাকার, রসালো ধরনের। ফল পাকার পরে কালো রং ধারণ করে। এই ফল পাখির খুব প্রিয় খাবার। কোন কোন অঞ্চলে, সেখানকার মানব শিশুরাও এই ফল খেয়ে থাকে। এর ফলেরও রয়েছে কিছু ঔষধি গুণাগুণ। ফলের বীজ সাধারণত পাখির মাধ্যমে এখানে সেখানে পতিত হয়। আর অনেকটা এইভাবেই এর বংশবিস্তার হয়ে থাকে। বৈশাখ থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত ফুল এবং ফল হয়।
মেন্দা গাছের কাঠও অনেক কাজের। এর কাঠ হয় টেকসই এবং উজ্জ্বল রঙের। যে কোন প্রকার ভাস্কর্যের জন্য এই কাঠ ব্যাবহার করা হয়।
মেন্দা গাছের ঔষধি গুণাগুণ আছে কি!
- বীজের তেল বাত রোগ সারাতে কাজে লাগে।
- এর পাতা এবং ছাল আমাশয় ও পেটের পীড়ার সুস্থতায় কাজে লাগে।
- ব্যাথা উপশমকারী ও কমোদ্দীপক হিসেবে ব্যবহার হয় এর ছাল।
- বল বর্ধক হিসেবে এর শেকড় ব্যবহার করা হয়।
- যেকোন প্রকার কাশি নিরাময় করে।
- গিটের ব্যাথা, গলার সমস্যা, প্লীহার রোগ সারাতে এই গাছ বেশ উপকারী।
- পক্ষাগাতগ্রস্ত ব্যক্তির চিকিৎসায় এই গাছের ব্যবহার খুব কার্যকরি।
- ভাঙা হাড়ের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। ভাঙা হাড়ে বাকলের অংশ দিয়ে প্রলেপ দিলে উপশমে উপকার পাওয়া যায়।
বাড়ির আশেপাশে এই গাছ দেখা যায়। দক্ষিণ এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায় এই গাছের আধিক্য দেখা যায়।