রংপুর অঞ্চলে আলুর উৎপাদন প্রতি বছরই ভালো হয়। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে বছরের পর বছর হিমাগারে আলু সংরক্ষণ, ন্যায্য দাম না পাওয়াসহ আরও অনেক কিছু। বাড়তি খরচের বোঝা নিয়ে এমন পরিস্থিতিতে এবারো আলু চাষ শুরু হয়েছে। তবে রংপুরে আলু নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে আলু নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে কৃষকরা।
লেড-ব্লাইড রোগের আশঙ্কা রয়েছে
চলতি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৭ হাজার হেক্টর জমিতে।
লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে ২২ লাখ ৬৪ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন জাতের আলুর উৎপাদন সম্ভব।
অন্তত এমনটাই মনে করছেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।
ভালো ফলন পেতে তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছে।
ছত্রাকনাশক ওষুধের ব্যবহারের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে বলে জানায় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।
অন্যদিকে চাষিরা শীতের কারণে আলুর ফলন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
রংপুর অঞ্চলে কিছুদিন ধরে শীতের প্রকোপের পাশাপাশি ঘন কুয়াশা পড়ছে।
আলুর জন্য এই কুয়াশা খুব ক্ষতিকর, যাতে চাষিরা লেড-ব্লাইড রোগের আশঙ্কা করছেন।
চলতি মৌসুমে প্রায় এক লাখ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হচ্ছে রংপুর অঞ্চলে।
চাষিরাও বৈরী আবহাওয়ার কারণে নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে খেতের পরিচর্যায় নেমে পড়েছেন।
গত মৌসুমে আলুচাষিরা আলুতে খুব একটা লাভ করতে পারেননি।
এখনো অনেক আলু হিমাগারে সংরক্ষিত রয়েছে বলে তারা জানান।
আলু চাষে ঠান্ডা উপকারী হলেও কুয়াশা ক্ষতিকর
আলু চাষের জন্য ঠান্ডা আবহাওয়া অনেক উপকারী।
কিন্তু কুয়াশা তাতে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় বিধায় উদ্বিগ্ন কৃষক।
আবহাওয়া অধিদফতরের দেওয়া পূর্বাভাস বলছে, জানুয়ারি মাসে এ অঞ্চলে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে।
তবে এই আবহাওয়া আলুর জন্য তেমন ক্ষতিকর নয় বলে উল্লেখ করেছে কৃষি বিভাগ।
এই অবস্থা তাই কাটিয়ে উঠতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
রংপুর মেট্রোপলিটন কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আমিনা খাতুন।
তিনি জানান, নগরের ৩৩টি ওয়ার্ডে চলতি বছর ৬ হাজার ৮ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে।
যার মধ্যে চাষ করা হয়েছে ৬০০ হেক্টর উফশি এবং ৪০০ হেক্টরে দেশি জাতের আলু।
তার মতে, আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে এ বছর রেকর্ড পরিমাণ আলুর উৎপাদন হবে।
রংপুর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, বিগত মৌসুমে রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট এবং নীলফামারী জেলায় আলু চাষ করা হয়েছিল।
গত মৌসুমে বিভিন্ন উন্নত জাতের গোল আলু ৯৭ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছিল।
একই পরিমাণ জমিতে এবারও বিভিন্ন জাতের আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ওবায়দুর রহমান।
তিনি জানান, এবার আলু চাষ করা হচ্ছে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে।
চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।