ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে গত বছর বিক্ষোভ হয়। এতে নিহত হয় ৭৫০ জন কৃষক। নিহত কৃষকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেবার ঘোষণা দিয়েছে তেলেঙ্গানা সরকার। রাজধানী নয়াদিল্লির সীমান্তে নিহত হন এই কৃষকেরা। তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৩ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। গত শনিবার রাজ্যটির সরকারের কাছ থেকে এমন ঘোষণা এসেছে, এমনটাই জানা গেছে।
কৃষকদের টানা আন্দোলনের মুখে গত শুক্রবার তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন।
কৃষি আইন তিনটি প্রণয়নের পর থেকে শুরু হয় কৃষকদের আন্দোলন।
প্রায় এক বছর ধরে আন্দোলন করেন কৃষকেরা।
এই আন্দোলনের একপর্যায়ে রাজধানী নয়াদিল্লিও অবরুদ্ধ করেন কৃষকেরা।
রাজ্য সরকারের তিন লাখ রুপির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার যাতে নিহত কৃষকদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেয়।
এমন দাবি তুলেছেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও।
এ ছাড়া তিনি দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহারের।
৭৫০ জন কৃষকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে রাজ্য সরকারের ২২ কোটি ৫০ লাখ রুপি ব্যয় হবে বলে জানান চন্দ্রশেখর রাও।
তিনি কৃষক নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন বিক্ষোভে নিহত কৃষকদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে।
গত বৃহস্পতিবার চন্দ্রশেখর রাও তেলেঙ্গানা রাজ্যের ধানচাষিদের পক্ষে হায়দরাবাদে ধরনায় অংশ নেন।
সেখানে কৃষক ইস্যুতে জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিতে পিছপা হবেন না বলে তিনি ঘোষণা দেন।
তিনি সবকিছুর আগে দেশের কৃষকদের আত্মনির্ভর করে তোলার দাবি করেন।
সেই প্রতিশ্রুতির ধারাবাহিকতায় তিনি ঘোষণা দেন নিহত কৃষকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার তিনটি কৃষি আইন প্রণয়নে অধ্যাদেশ জারি করে।
তার সূত্র ধরে গত বছরের সেপ্টেম্বরে পার্লামেন্টের খণ্ডকালীন অধিবেশনে প্রায় বিনা আলোচনায় বিরোধীদের দাবি উপেক্ষা করা হয় এবং তিনটি আইন পাস করানো হয়।
পাসকৃত এই আইনগুলোর মধ্যে প্রথমটি ‘অত্যাবশ্যক পণ্য (সংশোধনী) আইন’ বা ‘দ্য এসেনশিয়াল কমোডিটিজ (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট’।
দ্বিতীয় আইনটি হল ‘কৃষিপণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন আইন’ বা ‘ফারমার্স প্রডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স (প্রমোশন অ্যান্ড ফ্যাসিলিয়েশন) অ্যাক্ট’।
তৃতীয় আইন টিকে বলা হচ্ছে ‘কৃষক সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন (মূল্য এবং কৃষি পরিষেবাসংক্রান্ত) আইন’ বা ‘ফারমার্স (এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রোটেকশন) অ্যাগ্রিমেন্ট অন প্রাইস অ্যান্ড ফার্ম সার্ভিসেস অ্যাক্ট’।