নারকেল বাগেরহাট জেলায় অন্যতম ফল। বাণিজ্যিকভাবেই নারকেলের চাষ হয় এ জেলায়। প্রতিটি বাড়িতেই নারকেলগাছ কম-বেশি দেখা যায়। তবে জেলায় নারকেলের পাতায় হোয়াইট ফ্লাই বা সাদা পোকার আক্রমণ বেড়েছে। নারকেলের পাতায় হোয়াইট ফ্লাই এর আক্রমন হবার কারণে এর চাষে সমস্যা দেখা গেছে।
নারকেলের চাষ কমে গেছে
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে নারকেলের আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৬১৯ হেক্টর জমিতে।
জেলায় চলতি অর্থবছর ৩০ হাজার ৯৩৬ টন নারকেলের উৎপাদন হয়েছে।
তবে কৃষি বিভাগ জানায় বিগত অর্থবছরের চেয়ে জেলায় নারকেলগাছের আবাদ ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কমেছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, নারকেলগাছের পাতার ওপর কালো আবরণ পড়েছে।
সেই সাথে পাতার নিচে তুলার মতো সাদা রঙের পোকা বাসা বেঁধেছে।
এই পোকা প্রথমে পাতার ওপর বসে মাকড়সার জালের মতো আবরণ তৈরি করে।
ধীরে ধীরে এর পরিমাণ বেড়ে গাছের পাতা নষ্ট হয়ে গাছটি দুর্বল হয়ে পড়ে।
দীর্ঘ সময়ের আক্রমণে গাছ মরে যায়।
জেলার নারকেল চাষিরা পোকার আক্রমণে তাদের আশংকার কথা জানান।
অনেকের জীবন যাপন পরিচালিত হয় নারকেলের উপর।
কিন্তু পোকার আক্রমণে তারা তাদের চাষে কাঙ্খিত ফলন পাচ্ছে না।
উল্টো তাদের কে লোকসান গুণতে হচেছ।
এই বিষয়ে বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজিজুর রহমান এর সাথে।
উপপরিচালক বলেন, পোকা আক্রমণের বিষয়টি ভাবার মতই।
এরই মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কয়েকজন গবেষক বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে গেছেন।
তাদের মতে, প্রায় ৬১টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছে এই পোকার আক্রমণ ঘটেছে।
তবে কৃষি অধিদপ্তর কৃষকদের পাশে আছে বলে এই কর্মকর্তা জানান।
তিনি জানান তারা কৃষকদের ইমিডা ক্লোরোফিড জাতীয় ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছেন।
এতে পোকার সংক্রমণ অনেক কমে যাবে বলে তিনি জানান।
নারকেলগাছ অনেক লম্বা হয়। আর সেই কারণে ফুট পাম্পের মাধ্যমে স্প্রে করতে হবে।
তিনি সতর্ক করে বলেন সকল নারকেল গাছে একসঙ্গে এই স্প্রে করতে হবে।
এছাড়া তিনি আরও বলেন, এই পোকার আক্রমণ ভালোভাবে দমন করতে হবে।
তার জন্য আইপিএম বা সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থার মাধ্যমে করতে হবে দমন।
তবে এখনও এই পোকা দমনে আইপিএমের সঠিক গাইডলাইন তৈরি হয়নি।
গাইডলাইন তৈরি হলে এটি কার্যকরভাবে দমন করা সম্ভব হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।