Friday, 18 July, 2025

সর্বাধিক পঠিত

চাষের তালিকায় সূর্যমুখী ফুল-বীজ


ষাটের দশকে আমাদের দেশে সূর্যমুখী ফুলের বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়। অতি পরিচিত এই ফুলের তেল গুণে ও মানে অনন্য এবং সারাবিশ্বে এর চাহিদা ব্যাপক ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে রাজশাহী, কুষ্টিয়া, নাটোর, দিনাজপুর, টাঙাইল ইত্যাদি বিভিন্ন জেলাগুলোতে ব্যাপক আকারে এই ফুলের চাষ হচ্ছে।

সূর্যমুখীর বিভিন্ন রকম ব্যবহার রয়েছে। এটি ঘিয়ের পরিবর্তে ব্যবহার করা যায়, যেটা বনস্পতি তেল নামেও পরিচিত। এই বীজ মাড়াই করে পাওয়া যায় তেল। এই তেল ভিটামিন-ই এর অন্যতম উৎস এই তেলে কোলেষ্টরেল এর মাত্রা অনেক কম, একই সাথে ভিটামিন এ ও ডি রয়েছে।

সূর্যমুখীর বীজ পশুখাদ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। হৃদরোগের ক্ষেত্রে অনেক উপকারী এই তেল, এমনকি মসৃণ মাংস পেশির কোষ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে এই তেল।

আরো পড়ুন
অসময়ে তরমুজ চাষে সুবর্ণচরের আবুল বাসারের বাজিমাত!

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় অসময়ে তরমুজ চাষ করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষক মো. আবুল বাসার। বর্ষাকালে সফলভাবে তরমুজ উৎপাদন করে Read more

বন্যা পরবর্তী মাছ চাষিদের করণীয়

বন্যা মাছ চাষিদের জন্য একটি মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর মাছ চাষে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে Read more

কখন চাষ করবেন সূর্যমুখীর বীজ

সারা বছর চাষ করা গেলেও অগ্রহায়ন মাসে চাষ করা হয় কেবল ভালো ফলনের আশায়। তবে খরিফ-১ মৌসুমেও অর্থাৎ জৈষ্ঠ্য মাসের দিকেও এটির বীজ বপন করা যায়। আবার তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সে. এর নিচে হলে ১০-১২ দিনের মধ্যে বীজ বপন করে ফেলা যায়।

Sunflower
Sunflower

কিভাবে জমি তৈরি করা যায় সূর্যমুখীর বীজ

এই ফুল বীজ রোপনের জন্য গভীরভাবে জমি চাষ করে নিয়ে, মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হয়।

কোন জাতের সূর্যমুখীর বীজ ভাল হবে

সূর্যমুখীর ভাল ফলনের জন্য কিরণী (ডিএস-১) জাতের বীজ সবচেয়ে উত্তম। ১ হাজার বীজের ওজন হয় কেবল ৬০-৬৫ গ্রাম। আকারে লম্বা, চেপ্টা ও কালো জাতের এই বীজ ১৯৮২ সালে জার্মপ্লাজম হতে উদ্ভাবিত হয়। এর ফলন আসে ৩ মাস পরে এবং ফসল সংগ্রহ করতে প্রায় ৯০-১০০ দিন লেগে যায়।

কিভাবে সূর্যমুখীর বীজ বপন করবেন

ফুল গাছ বাণিজ্যিকভাবে রোপন করতে হলে সবচেয়ে উত্তম হলো তা সারি সারি করে বপন করা। সারি অনুসারে ৫০ সেমি এবং কলাম হিসেবে ২৫ সেমি দুরত্ব বজায় রেখে তবেই বীজ বপন করা হয়। বীজের পরিমাণ ধরতে গেলে জমি ভেদে কমবেশি করতে হবে তবে হেক্টর প্রতি প্রায় ১০ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়ে থাকে।

সূর্যমুখীর বীজ চাষে প্রয়োজনীয় সার

সারের নাম পরিমাণ (প্রতি একরে)
ইউরিয়া ৪০০-৫০০ কেজি
টিএসপি ৩৭০ কেজি
এমপি ৩০০-৩৭০ কেজি
জিংক সালফেট ২০ কেজি
বরিক এসিড ২৫ কেজি
ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ২৪০ কেজি

সার প্রয়োগের সময় কেবল ইউরিয়া সার অর্ধেক রেখে দিতে হবে ও বাকি সবগুলো জমি চাষের সময় মাটির সাথে একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে। যে ইউরিয়া সার থাকবে তার অর্ধেক চারা গজানোর ২০দিন পর বাকিটা, ৪০ দিন পরে প্রয়োগ করে ফেলতে হবে।

রোগ-বালাই এর ক্ষেত্রে কি প্রতিকার নিবেন

সূর্যমুখীরপাতা ঝলসানো রোগ, যা ছত্রাকের আক্রমনে ঘটে সেটা বেশি দেখা দেয়। আবার শিকড় পচা রোগের প্রাদুর্ভাবও প্রচুর পরিমানে দেখা যায়। এটিও এক জাতীয় ছত্রাকের আক্রমণে ঘটে থাকে।

প্রতিকারের জন্য সহনশীল জাতের ব্যবহারের পাশাপাশি রোভারাল-৫০০ ডব্লিউপি ২% হারে পানিতে মিশিয়ে প্রয়োগ করা যেতে পারে। কিংবা প্লাবন সেচের মাধ্যমে প্রকোপ কমানো যায়। একই জমিতে বারংবার চাষ করলে অবশ্য রোগের প্রাদুর্ভাব কম হয়।

ফসল সংগ্রহ করবেন কখনঃ

ফসল সংগ্রহ করার জন্য অন্তত ৯০-১০০ দিন অপেক্ষা করতে হবে। এর পর ফসল মানে ফুল সংগ্রহ করা যাবে।

0 comments on “চাষের তালিকায় সূর্যমুখী ফুল-বীজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ