সারাবিশ্বে করোনা পরিস্থিতি ও পরবর্তী সময় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। ডিম ও মুরগির মাংসের খুচরা দাম নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে অসন্তুষ্টি বাড়ছে।
খামারিরা তাদের উৎপাদন মূল্য না পাওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই নতুন করে অনেক পোলট্রি খামার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, যা উৎপাদনে প্রভাব ফেলছে জানিয়েছে বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন।
বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশে বিদ্যমান ১ লাখ ৫৮ হাজার ১৭৯ খামারের মধ্যে চালু আছে ৯৫ হাজার ৫২৩ খামার। ১ লাখ ৫৮ হাজার ১৭৯ খামারের মুরগির মাংস উৎপাদন সক্ষমতা ৫ হাজার ২৭৩ টন হলেও বর্তমানে সেখানে ৯৫ হাজার ৫২৩ খামারে উৎপাদন হচ্ছে ৪ হাজার ২১৯ টন, যা উৎপাদন সক্ষমতা থেকে ২৫ দশমিক ৭১ শতাংশ কম। একইভাবে ডিম উৎপাদনের সক্ষমতা দৈনিক যেখানে ৬ কোটি ৬৪ লাখ ৮২ হাজার ১৮৩টি, সেখানে দৈনিক উৎপাদন হচ্ছে ৪ কোটি ৩২ লাখ ১৩ হাজার ৪১৮টি ডিম, যা উৎপাদন সক্ষমতা থেকে ২৫ শতাংশ কম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির মহাসচিব খোন্দকার মো. মহসিন বলেন, পোলট্রির ডিম ও মাংস উৎপাদনে ৬৮-৭০ শতাংশ খরচ হয় খাদ্যে। আর এ খাদ্যের বেশিরভাগ উপাদান বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আমদানির জন্য ৮৪ টাকার ডলার ১১০ টাকা দিয়েও সহজলভ্য হচ্ছে না। জাহাজ ভাড়া বৃদ্ধি, ডিজেল, বিদ্যুৎ, পরিবহনসহ সব কিছুর দাম বৃদ্ধির ফলে বেড়েছে উৎপাদন খরচ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ২০২০ সালের মাঝামাঝি প্রতিকেজি ভুট্টার দাম ছিল ১৭ দশমিক ৩০ টাকা, যা বর্তমানে ভুট্টার মৌসুমের শুরুতে প্রতিকেজি শুকনা ভুট্টার মূল্য ৩৮ টাকার ওপরে। পোলট্রি খাদ্যে ভুট্টার ব্যবহার ৫৭-৫৮ শতাংশ। একই সঙ্গে পোলট্রি খাদ্যে সয়াবিন খৈলের ব্যবহার ২০-২৫ শতাংশ। ওই সয়াবিন খৈল ২০২০ সালে প্রতিকেজি যেখানে ৩৫-৩৬ টাকা ছিল, এখন সেই সয়াবিন খৈল প্রতিকেজি ৮৪ টাকার ওপরে।
পোলট্রি খাদ্যে ব্যবহৃত হয় এমন সবকটি খাদ্য উপাদানের মূল্যবৃদ্ধিসহ দুষ্প্রাপ্য হয়ে যাচ্ছে কোনো না কোনোটি। বর্তমানে খাদ্য উপাদান সংকট চরমে। প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান আমদানির জন্য চাহিদামতো এলসি খুলতে না পারলে একে একে বন্ধ হবে ছোট-বড় আরও পোলট্রি খামারসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।