
চাষের খরচ অনেক কম, তেমনি কষ্টও কম। তবে কষ্টের তুলনায় চাষের লাভ বেশি। মাদারীপুরে তিল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা মূলত এই কারণে ।
প্রতিবছরই ফলন ভালো হচ্ছে তিলের। আর তাই প্রতিবছরই এই জেলায় বাড়ছে তিলের আবাদি জমির পরিমাণ ও চাষির সংখ্যা। চাষিদের আশা সরকারিভাবে উচ্চফলনশীল বীজ বিতরণ ও কারিগরি প্রশিক্ষণ দেয়া হলে তিল চাষে আরও অনেকে আগ্রহী হবেন বলে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রতি বিঘায় দেড় থেকে ২ হাজার টাকা খরচ করেই ৮ থেকে ১০ মণ তিল এর ফলন পাওয়া যায়। তিল এর চাষ সাধারণত উঁচু ও পতিত জমিতে ভালো হয়। জলাবদ্ধতা হলে বা নিচু জমিতে বৃষ্টির পানি জমলে তিল নষ্ট হয়ে যায়।
তিলের চাষ নেই খরচ বা কষ্ট
তিল চাষের জন্য সার তেমন দিতে হয় না। কীটনাশক বা সেচ দিতে হয় না বা আগাছাও পরিষ্কার করতে হয় না তেমন। জুলাইয়ের শেষ দিকে তিল উত্তোলনের কাজ শুরু হয়ে পুরো আগস্ট জুড়ে চলে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বিঘা থেকে তিল চাষ করে লাভ আসছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।
সদর উপজেলার ধুরাইল গ্রামের তিলচাষি বলেন, তিল এর চাষে খরচ কম হয়, আয় হয় বেশি। তাদের এলাকায় তিল এর চাষ নতুন নতুন শুরু হয়েছে। কৃষকরা এখনও ভালোভাবে এই ফসলের বিষয়ে তেমন জানেন না বলেই জানান সে কৃষক।
তিন বিঘা জমিতে তিল চাষ করেছেন বলে জানান আরেকজন কৃষক। তিনি জানান প্রায় ৭০ হাজারের ওপর টাকা এসেছে তার এই তিল চাষে। প্রতিবছরই তিনি তিল চাষ করবেন বলে ভাবছেন।
আরেক কৃষক জানান, জমিতে নিড়ানি দিতে হয় না। বীজ কোনো রকম বুনে রেখে দেয়া হয়। আর তাতেই ফলন ভালো হয়েছে তার। বৃষ্টির পানি জমলেই গাছ মরে যায় এটা একটা বড় সমস্যা বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
মাদারীপুর জেলা কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি জানান জেলায় ৭৫০ হেক্টর জমিতে তিল চাষ হয়েছে এ বছর। বৃষ্টিতে সামান্য ক্ষতি হলেও প্রায় ৮২৫ টন তিল এর উৎপাদন হয়েছে। এর বাজারমূল্য ৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
তিনি আরও বলেন, তিলের দাম এখন বাজারে মণপ্রতি ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা। চাষিরা তিল বিক্রি করে অনেক লাভবান হয়েছেন বলে তিনি জানান।