Tuesday, 19 November, 2024

সর্বাধিক পঠিত

ডিএই-প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ, তদন্ত চান কর্মকর্তারা


কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে (ডিএই) যেন দুর্নিতীর আস্তানা। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের একটি প্রকল্পে ব্যাগ, কাগজ, কলম ও মনিহারিসামগ্রী কেনা হয়েছে। ঢাকার কাজীপাড়ার মেসার্স তাসনিম এন্টারপ্রাইজ থেকে এসকল সামগ্রী কেনা হয়েছে। বিক্রয়  রসিদ সূত্রে তাই জানা যায়। কিন্তু রসিদে দেওয়া ঠিকানায় গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সত্যিকার কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই ডিএই-প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

তাসনিম এন্টারপ্রাইজের রসিদে দেয়া ঠিকানায় গিয়ে একটি আবাসিক ভবন পাওয়া যায়। ভবনের বাসিন্দারা বলছেন, এই নামে কোনো প্রতিষ্ঠান সেখানে কখনোই ছিল না, নামও শোনেন নি। প্রতিষ্ঠানটির রসিদে পাওয়া দুটি মোবাইল  নম্বরে ফোন করা হয়। নম্বর দুটিই বন্ধ পাওয়া যায়।

ডিএইর এই প্রকল্পে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের ভুয়া রসিদ জমা দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ েএর অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পে মনিহারিসামগ্রী কেনা বাবদ ৪০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল । তার মধ্যে তাসনিম এন্টারপ্রাইজকে ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা বিল দেওয়ার রসিদ সরেজমিনে পাওয়া গেছে।

আরো পড়ুন
দেশীয় পাট বীজ উৎপাদনে চমক দেখালেন কৃষক মুক্তার

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার কৃষক মুক্তার হোসেন মোল্যা দেশীয় পাট বীজ উৎপাদনে উদ্ভাবনী সাফল্য দেখিয়েছেন। সালথা উপজেলা পাট উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত Read more

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে
স্বস্তি নেই সবজির বাজারে

রাজধানীর বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। একদিকে কিছু পণ্যের দাম কমলেও অন্যান্য অনেক পণ্যের দাম স্থিতিশীল Read more

‘নিরাপদ উদ্যান তাত্ত্বিক ফসল উৎপাদন ও প্রযুক্তি হস্তান্তর’ নামকরণ করা হয়েছে প্রকল্পটির ।প্রকল্পব্যয় ৩৬ কোটি টাকারও বেশি এই প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল—চার বছর মেয়াদি। মনিহারি পণ্য কেনা ছাড়াও সই জাল করে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার নামে সম্মানীর টাকা তুলে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি গাড়ি ব্যবহারে অনিয়মের অভিযোগও উঠেছে এই প্রকল্পের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

প্রকল্পটিতে প্রদত্ত নয়টি গাড়ির একটি প্রকল্প পরিচালকের আত্মীয়-স্বজনেরা ব্যবহার করেন। বাকিগুলো থেকে তিনটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের তিন অতিরিক্ত সচিবকে ব্যবহার েএর জন্য দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ আছে এর মধ্যে একটি পরিচালকের পরিচিত ব্যক্তিরা ব্যবহার করেন।

অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. সাহিনুল ইসলাম এর সাথে কথা হয়। তিনি  বলেন, দর প্রস্তাব আহ্বান এর মাধ্যমে সর্বনিম্ন দরদাতার কাছ থেকেই পণ্য কেনা হয়েছে।  দরদাতা প্রতিষ্ঠানই রসিদ সরবরাহ করেছে।

যদিও ডিএইর কর্মকর্তারা  এসব অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা দরকার বলে মনে করছেন।

জাল স্বাক্ষরে অর্থ আত্মসাৎ

আগারগাঁওয়ের তাজকো ইন্টারন্যাশনাল নামের প্রতিষ্ঠান থেকে ডিএইর এই প্রকল্পে কম্পিউটার, প্রিন্টারসহ নানা ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম কেনার রসিদ দেখানো হয়েছে । যদিও প্রতিষ্ঠানটির অংশীদার মালিক তসলিম উদ্দিন জানান, এই প্রকল্পে তাঁদের প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো পণ্য বিক্রি করা হয়নি। কিন্তু রসিদ বলছে তাজকো ইন্টারন্যাশনালকে ১৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকা বিল দেওয়া হয়েছে।

ডিএইর মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহর সই জাল করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিকল্পনা কমিশনের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার সইও জাল করা হয়েছে । গত ১০ জুন প্রকল্পটির পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয় বলে নথিতে দেখানো হয়। কিন্তু সভায় উপস্থিত থাকা  কর্মকর্তারা জানান, সম্মানী দেওয়ার নথিতে যে দেখানো সই তাঁদের নয়। উক্ত সভায় সব কর্মকর্তাকে সমান হারে তিন হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়েছে বলে প্রকল্পের নথিতে উল্লেখ আছে। যার মোট ব্যয় হয় ৯০ হাজার টাকা।

একই নথিতে ডিএইর মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহর স্বাক্ষর রয়েছে। যে স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে তা তাঁর অন্য সইয়ের সঙ্গে মেলে না।

প্রকল্পে মোট ৭২ লাখ টাকার জ্বালানি তেল ও গ্যাসের বিল-ভাউচার দেখানো হয়েছে। এই বিল ভাউচারে মেসার্স মোহনা এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ফিলিং স্টেশনের নাম থাকলেও, ঢাকার গাবতলীর ওই জ্বালানি তেল বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে  আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেননি।

0 comments on “ডিএই-প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ, তদন্ত চান কর্মকর্তারা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা