নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় কালবৈশাখীর গরম ঝড়ো হাওয়ায় বোরো ধানে ব্যাপক ক্ষতি দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা।
বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার গাওকান্দিয়া, কুল্লাগড়া, দুর্গাপুর, কাকৈরগড়া, চণ্ডিগড়, বিরিশিরি, ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, গরম ঝড়ো হাওয়ায় মাঠের ধানের শীষগুলো সাদা হয়ে মাটিতে মিশে গেছে।
কুল্লাগড়া ইউনিয়নের কামারখালী গ্রামের আদিবাসী কৃষক কোয়েল বলেন, জীবনেও আমি এমন গরম বাতাস দেখিনি। সকালে উঠে দেখি ক্ষেতের ধান সব মরে গেছে। আমরা কী খেয়ে বাঁচব, আমাদের তো কৃষি ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ঋণ করে গৃহস্থি করেছি। এখন কী করে ঋণ দেব? কীভাবে সারা বছর স্ত্রী, সন্তানের ভরণপোষণ করব? ক্ষেতের পর ক্ষেত সব নষ্ট হয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, গত ৫ এপ্রিল আকস্মিকভাবে গরম বাতাস একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এ বছর অত্র উপজেলায় ১৭ হাজার ৬০০ হেক্টর জমি আবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি প্রায় এক হাজার ৫০০ হেক্টরের মতো ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, পৌরসভাসহ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে জরিপকাজ অব্যাহত রেখেছেন। আপাতত কৃষকদের জমিতে সার্বক্ষণিক পানি রাখার পরামর্শসহ তাদের সঙ্গে এবং আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, এটি একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ইতোমধ্যে কৃষি কর্মকর্তাসহ অন্যান্য অফিসারকে নিয়ে মাঠের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সঙ্গে কথা বলেছি।
প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করার জন্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন মহলে কৃষি প্রণোদনার জন্য আবেদন জানানো হবে।