Friday, 14 March, 2025

সর্বাধিক পঠিত

ঝালকাঠিতে লোকসানে রবিশস্য চাষিরা


ঝালকাঠিতে তীব্র রোদ, অনাবৃষ্টি এবং খাল-বিলে পানি কমে যাওয়ায় বাঙ্গি-তরমুজসহ বিভিন্ন ফসলের ফলন কমে গেছে। ফলে আশানুরূপ ফলন না পেয়ে লোকসানে রবিশস্য চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার সদর উপজেলায় বাঙ্গির চাষ হয়েছে ১০ হেক্টর, নলছিটি উপজেলায় ১৫ হেক্টর, রাজাপুরে ২০ হেক্টর ও কাঠালিয়ার পাঁচ হেক্টর জমিতে।

এছাড়া তরমুজ চাষ হয়েছে সদর উপজেলায় তিন হেক্টর, নলছিটি উপজেলায় ৯ হেক্টর, রাজাপুরে ১০ হেক্টর ও কাঠালিয়ায় এক হেক্টর জমিতে।

আরো পড়ুন
বছরে ২৩০টি ডিম দেয় নতুন জাতের ‘বাউ ডাক’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) উদ্ভাবিত নতুন জাতের হাঁস ‘বাউ-ডাক’ দেশের হাঁস খামার ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। যেখানে দেশি Read more

মৎস্য খাতে তরুণদের আগ্রহ আশাব্যঞ্জক: ফরিদা আখতার
fish conference

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, তরুণদের মধ্যে মৎস্য খাতে কাজ করার প্রতি যে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, তা অত্যন্ত Read more

চলতি মৌসুমে আট হাজার তিনশ ৪৫ হেক্টর জমিতে করলা, মিস্টি কুমড়া, বেগুন, ঢেড়স, বরবটি, পুইশাক, লতিরাজ কচুসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি ও লতাকৃষির চাষ করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এ উপজেলায় চলতি রবি মৌসুমে পাঁচ হাজার পাঁচশ হেক্টর জমিতে রবিশস্যের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে শুক্তাগড় ও মঠবাড়ি ইউনিয়নে আবাদ বেশি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার একেশ্বারা ও বামনকাঠি এ দুই গ্রামে প্রায় ২৫ বিঘা জমির রবিশস্য পানির অভাবে ও রোদের তাপে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে এলাকার কৃষকরা কয়েক লাখ টাকার লোকসানে পড়েছেন।

বামনকাঠি ও একেশ্বারা গ্রামের চাষিরা জানান, কৃষি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, ব্র্যাক, আশা, গ্রামীণ ব্যাংক, শক্তি ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন তারা। এ টাকা দিয়ে ১০ বিঘা জমিতে বাঙ্গি, চার বিঘা জমিতে সূর্যমুখি, চার বিঘা জমিতে তিল, দুই বিঘা জমিতে মুগ ডাল, এক বিঘা জমিতে ছোলা, ১৫ কাঠা জমিতে ঢেড়শ, পাঁচ কাঠা জমিতে মরিচের চাষসহ অন্যান্য রবিশস্য চাষ করা হয়েছে।

চাষিরা প্রায় তিন লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন জমিতে। এ বছর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত রাজাপুরে কোনো বৃষ্টি না হওয়ায় ফসলের গাছ বৃদ্ধি পায়নি। ফুল ও ফল রোদের তাপে ঝরে পড়েছে। কাছাকাছি খাল না থাকায় সেচের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি।

পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে উচু এলাকায় চাষ করা হয় রবিশস্য। কিন্তু এবার বৃষ্টি না হওয়া এবং আশপাশের নালা শুকিয়ে যাওয়ায় পানি সেচ দেয়া সম্ভব হয়নি। তাই কাঙ্খিত ফলন হয়নি। যে ফলন হয়েছে তাতে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা পাওয়া যেতে পারে।

লোকসান পুষিয়ে উঠতে ওই এলাকার চাষিরা সরকারের কাছে বিশেষ প্রণোদনা পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন। ওই এলাকার কৃষক সাখাওয়াত ফরাজী বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের আওতায় কোনো প্রদর্শনী খেত করলে সে বিষয়ে খোঁজ খবর নেন কৃষি কর্মকর্তারা। কিন্তু ব্যক্তিগত উদ্যোগে কৃষি চাষ করলে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয় না।

তিনি আরও বলেন, গত বছর আমার ১৩ বিঘা জমির রবিশস্য জোয়ারের পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়। কিন্তু কৃষি কর্মকর্তারা একবারও খোঁজ নেননি। এবারেও ১৪ বিঘা জমির রবিশস্য রোদের তাপে নষ্ট হয়েছে। এ পর্যন্ত কোনো খোঁজ খবর নেননি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উল্লাহ বাহাদুর বলেন, পোকা নিধন ও প্রয়োজনীয় সেচের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ওই এলাকায় কাছাকাছি খাল না থাকায় ফসল উৎপাদন কম হতে পারে। উপজেলায় সার্বিক দিক থেকে এ বছর আবাদ বেশি হয়েছে এবং গত কয়েক বছরের তুলনায় ফলনও ভালো হয়েছে।

এ বছর জোয়ারের পানিও দেরিতে এসেছে। পর্যাপ্ত সেচের অভাবে দুই-এক জায়গায় সমস্যা হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্তরা স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে যাচাইবাছাই করে তাদেরকে প্রণোদনা দেয়া যেতে পারে বলে তিনি বলেন।

তিনি আরো জানান, উপজেলায় এ বছর মোট পাঁচ হাজার পাঁচ হেক্টর জমিতে রবিশস্য চাষ করা হয়েছে। সার্বিকভাবে ফলনও ভালো হয়েছে।

0 comments on “ঝালকাঠিতে লোকসানে রবিশস্য চাষিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আর্কাইভ