সিলেট বিভাগের ১২টি চা-বাগানে বকেয়া বেতন পরিশোধ না হওয়ায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) অধীন শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলছে দেড় মাস ধরে। এতে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ২০ কোটি টাকার চা-পাতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য ক্ষতিতে পড়েছে।
শ্রমিকদের দাবির মুখে গত রোববার শ্রীমঙ্গলে এক বৈঠকে বকেয়া বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও এখনো তা কার্যকর হয়নি।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, “তিন মাস ধরে বেতন বকেয়া থাকায় প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে জড়িত প্রায় ৫০ হাজার মানুষের জীবিকা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।”
গত বুধবার দুই সপ্তাহের বকেয়া বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। শ্রমিকদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, রোববার বেতন পরিশোধ করা হবে। এর ফলে শ্রমিকেরা সোমবার থেকে কাজে ফিরতে পারেন।
এনটিসির মহাব্যবস্থাপক এমদাদুল হক জানান, “বুধবার শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে তা সম্ভব হয়নি। আশা করছি, রোববার দুই সপ্তাহের বেতন পরিশোধ করতে পারব। বাকি বেতন পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে।”
বেতন বন্ধ থাকায় শুধু চা-পাতা নষ্টই হয়নি, উৎপাদন বন্ধ থাকায় সিলেটের লাক্কাতুরা, কেওয়াছড়া, দলদলি এবং অন্যান্য বাগানের সামগ্রিক অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উৎপাদন পুনরায় চালু করতে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের বিকল্প নেই।
চা-শিল্পের অর্থনীতিতে এনটিসির চা-বাগানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শ্রমিকদের বকেয়া বেতন দ্রুত পরিশোধ করা না হলে এই শিল্পে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে। সরকার ও কর্তৃপক্ষের সমন্বিত উদ্যোগে দ্রুত এই অচলাবস্থা কাটানোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।