সুগন্ধি ধান চাষে লাভবান হচ্ছেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কৃষকেরা। তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া ধান তারা চাষ করেছেন তারা এ বছর। গত এক সপ্তাহ ধরে বাজারে উঠতে শুরু করেছে এ ধান। বর্তমানে বাজারে ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছে এর। দেড় হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে এক মণ তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া চাল। এ চালের উৎপাদন খরচ কম হয় এবং ভালো দাম পাওয়া যায়। সুগন্ধি ধান চাষে লাভবান কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।
কৃষক ও চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শেরপুরের তুলসীমালা চাল সারা দেশজুড়ে বিখ্যাত।
তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া চাল আকারে চিকন এবং খেতে সুস্বাদু।
পোলাও, বিরিয়ানি, পায়েস, খিচুড়ি, পিঠাসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি হয় এ সুগন্ধী চালে।
আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে এর আবাদ হয়
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে তুলসীমালা চালের চাষ হয়।
তাছাড়া এক হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে চিনিগুঁড়া ধানের।
এ সুগন্ধি ধানের আবাদ বেশি হয়ে থাকে কলসপাড়, যোগানিয়া, বাঘবেড় ও মরিচপুরান ইউনিয়নে।
এ মৌসুমে খেতে পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন ছিল না।
সেই সাথে আবহাওয়া ভালো থাকার কারণে স্বল্প খরচেই কৃষকেরা ফলন ঘরে তুলতে পেরেছেন।
এক একর জমিতে এ সুগন্ধি ধান চাষে সম্পূর্ণ খরচ পড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।
তার বিপরীতে ৩৫ মণ করে ধান পাওয়া যায়।
সে হিসাবে এক একর জমিতে কৃষকের ৩০ হাজার টাকার বেশি লাভ থাকে।
কলসপাড় গ্রামের কৃষক মঞ্জুরুল ইসলাম।
তিনি জানান এ বছর দুই একর জমিতে তুলসীমালা ধানের আবাদ করেন।
ধান লাগানো থেকে কাটা পর্যন্ত প্রতি একরে খরচ হয়েছে ১৮ হাজার টাকা।
এর বিপরীতে তিনি ৪০ মণ হারে ধান পেয়েছেন।
বাজারে প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৫৫০ টাকা করে বিক্রি করেছেন।
নালিতাবাড়ী বাজারের সুগন্ধি ধানের আড়তদার রাজিন ট্রেডার্সের মালিক মো. সুমন।
এই ব্যবসায়ী বলেন, এক সপ্তাহ ধরে বাজারে উঠতে শুরু করেছে তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া ধান।
বর্তমানে কিছু ধান ভেজা রয়েছে।
শুকিয়ে গেলে এর দাম আরও বেড়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
মণ প্রতি দাম দুই হাজার টাকা হতে পারে বলে তার ধারণা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির।
তিনি বলেন, লাভ হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ রয়েছে তুলসীমালা ও চিনিগুঁড়া ধান চাষে।
এসব সুগন্ধি চালের ঈদ-পূজাসহ বিভিন্ন উৎসব–পার্বণে আলাদা কদর রয়েছে।