পার্বত্য জেলায় জাম্বুরা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সারি সারি জাম্বুরার বাগান পাহাড়জুড়ে এখন চোখে পড়বে। পাহাড়ে উৎপাদিত জাম্বুরা স্থানীয় হাটবাজারের পাশাপাশি সারা দেশে সরবরাহ হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে ফলটি ‘জাম্বুরা’ বা ‘বাতাবি লেবু’ নামে পরিচিত। তবে চাকমা ভাষায় এর নাম হচ্ছে ‘কন্ডাল’। দেশব্যাপী জাম্বুরার চাহিদা করোনা মহামারিতে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষিবিদরা। আর পার্বত্য জেলায় জাম্বুরা চাষ দিন দিন বাড়ছে।
এই ফল বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলে।
পার্বত্য জেলাসমূহ রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকার আনাচকানাচে।
মিশ্র ফল হিসেবে জাম্বুরা চাষে লা্ভবান হচ্ছেন চাষিরা
মিশ্র ফল হিসেবে অন্যান্য ফলের পাশাপাশি জাম্বুরা চাষ করায় অধিক লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুসারে, জাম্বুরার চাষ বেশি হচ্ছে রাঙামাটির জেলার মধ্যে সদর, লংগদু, বরকল, বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর, জরাছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলায়।
এসব উপজেলা থেকে কৃষকরা রাঙামাটি শহরের সমতাঘাট এবং পৌর ট্রাক টার্মিনালের হাটে জাম্বুরা নিয়ে আসেন।
ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে পাইকারি দরে জাম্বুরা সংগ্রহ করে সারা দেশে সরবরাহ করেন।
রাঙামাটির প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র বনরূপা সমতাঘাট বাজার।
এই বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে বাজারে আকারভেদে প্রতি হাজার জাম্বুরা পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি দরে ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকায়।
অন্যদিকে প্রতিটি জাম্বুরা ১০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে।
সদর উপজেলার বন্দুকভাঙার জাম্বুরা চাষি অনন্ত চাকমা।
তিনি জানান যে ছোট একটা জাম্বুরার বাগান আছে তার।
জাম্বুরা এ বছরে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়েছে।
ফলন ভালো হওয়ায় পাইকারি বাজারে ৮ থেকে ১০ টাকা বিক্রি করতে পেরেছেন তিনি।
এ বছরে প্রায় ৩০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে জাম্বুরা বিক্রি করে।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক।
তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চল সমূহের আবহাওয়া ও মাটি জাম্বুরা চাষের জন্য উপযুক্ত।
এরকম উপযুক্ত আবহাওয়া হবার কারণে এ বছর ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে।
পার্বত্য জেলায় ১ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে জাম্বুরার আবাদ হয়েছে।
তার হিসাব অনুসারে প্রতি হেক্টরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ টন।
তিনি আরও জানান যে, এই ফলের চাহিদা করোনার কারণে বেড়েছে।
সহজ শর্তে কৃষকরা ঋণসহ কৃষি সহায়তা পাওয়া গেলে এবং পাহাড়ে উৎপাদিত ফলমূল সংরক্ষণে হিমাগার স্থাপন করা গেলে কৃষকরা ন্যায্য দাম পাবেন।