পদ্মা সেতুর প্রভাবে বাগেরহাটের চিংড়ি ভোরে ঢাকার বাজারে। পদ্মাসেতু চালু হওয়ায় বাগেরহাটে মৎস্য ও কৃষিপণ্যে সুবিধা ভোগ করতে শুরু করেছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। মাওয়া ঘাটে অপেক্ষার চিরায়ত প্রথা এখন অতীত। উৎপাদিত কৃষিপণ্য, সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ পদ্মা সেতু দিয়ে সহজেই রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। এতে একদিকে যেমন লাভবান হচ্ছেন প্রান্তিক চাষি-কৃষকরা, অন্যদিকে পণ্য নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও নেই বলে জানাচ্ছেন তারা।
পদ্মা সেতু চালুর মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বাগেরহাট জেলার দীর্ঘদিন ধরে চলা সড়কপথের ভোগান্তির অবসান হয়েছে। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের পাশাপাশি মৎস্য ও কৃষিপণ্যের দ্বারও খুলেছে অপার সম্ভাবনা নিয়ে।
জেলার চিংড়ি ও সাদা মাছের সবচেয়ে বড় আড়ত ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা বাজার। এই বাজারে প্রতিদিন প্রায় দেড় কোটি টাকার মাছ কেনাবেচা হয়।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৬৬ হাজার ৭১৩ হেক্টর জমিতে ৭৮ হাজার ৬৮৫টি বাগদা ও গলদা চিংড়ির ঘের রয়েছে। জেলায় চাষি রয়েছেন প্রায় ৫৬ হাজার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে সাড়ে ৩৩ হাজার মেট্রিক টন চিংড়ি উৎপাদন হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে এই পরিমাণ ছিল ৩৬ হাজার মেট্রিক টন। ২০২১-২২ অর্থবছরে উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন। টাকার যার অঙ্কে বাজারমূল্য প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। এই সময়ে সাদা মাছ উৎপাদন হয়েছে ৬০ হাজার মেট্রিক টন। টাকার অঙ্কে যার মূল্য ১৪ হাজার কোটি টাকা।
বাগেরহাট সিএন্ডবি বাজার সবজি পাইকারি হাটের ইজারাদার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আর মাত্র ১৫ দিন পরেই বর্ষাকালীন সবজি বাজারে বিক্রি হবে। প্রতি হাটে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫টি ট্রাকভর্তি সবজি রাজধানী শহরে সরবরাহ হয়। পদ্মা সেতুর ফলে ঘাটে আর অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। সবজি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও কমে গেছে। এতে কৃষকরা লাভবান হবেন।’
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাটে কৃষক পরিবার রয়েছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৩২৮টি। চলতি অর্থবছরে জেলায় ধান উৎপাদন হয়েছে ৬ লাখ ৯০ হাজার ৭২০ মেট্রিক টন। সবজি উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন।