নদীভাঙন ও বন্যাদুর্গত রংপুর জেলা থেকে পানি নেমে গেছে।এবারের আকস্মিক বন্যায় বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পাশাপাশি ফসলও বিনষ্ট হয়েছে খুব। নদীভাঙন ও বন্যাদূর্গত রংপুর জেলা এখন কৃষকদের আহাজারির আরেক নাম।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম।
তিনি জানান, এখনো নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি ফসলের ক্ষতির পরিমাণ।
তবে কৃষকদের আবারও নতুন করে লাগাতে হবে নষ্ট হওয়া আলু, মিষ্টি কুমড়া, বাদামসহ রবি ফসল।
সরেজমিনে দেখা যায়, গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে।
বিশেষ করে বাগেরহাট, বিনবিনা, মটুকপুর, পশ্চিম ইছলি ও মহিপুর থেকে নেমে গেছে পানি।
কিন্তু দুর্ভোগ কমার বদলে বেড়ে গেছে।
বিধ্বস্ত ঘরবাড়িগুলো কোনো উপায় নেই ঠিকঠাক করার, কারণ পুরোটাই ধসে গেছে।
অধিকাংশ মানুষ,যাদের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে বাঁধের পাশে আশ্রয় নিয়েছে এখন।
নদীর স্রোতে বাড়ি ভেঙে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে বাগেরহাট গ্রামের নওশাদ মিয়ার।
পানি সরে যাওয়ার পর পরই নিজেকে তোলার চেষ্টা করছেন।
তিনি রোদে শুকানোর চেষ্টা করছেন বিধ্বস্ত বাড়ির জরুরি কাগজপত্র ও জমির দলিল।
নওশাদ জানান যে, বহু বছর ধরে এমন বন্যা হয় নাই।
তার জীবন ভালো কাটলেও এবার কপাল ভেঙেছে তার।
তিনি আরও বলেন বন্যায় তার সব কিছু শেষ হল, কিছুই পান নি এমনকি সরকারি কোন সাহায্যও জোটেনি।
স্রোতের তোড়ে ভেঙে গেছে পশ্চিম ইছলি গ্রামের সঙ্গে বাগেরহাটসহ আরও কিছু এলাকার সড়কড়গুলো।
কোনো উপায় নেই হাঁটাচলা করার।
বিধ্বস্ত বাড়ি ও জিনিসপত্র নৌকায় করে অন্য স্থানে নিয়ে যাচ্ছে এসব এলাকার মানুষ।
পশ্চিম ইছলি গ্রামের আবদুল মতিন একজন কৃষক।
এবার ৬০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে করেছিলেন মিষ্টি কুমড়া ও আগাম জাতের আলু চাষ।
এক রাতেবন্যার পানির স্রোতে সব শেষ হয়ে গেছে।
ঋণের টাকা কিভাবে শোধ করবেন তাই ভেবে দিশেহারা এখন এই কৃষক।
গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী গ্রামে হঠাৎ উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়।
পানিবন্দী হয়ে পড়ে উপজেলার সাত ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
স্রোতে তোড়ে বাড়িঘর ও জমির ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুনিমুল হক।
তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে ইতিমধ্যে ২০ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়েছে।
ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়া লোকেদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে।
খুব শিগগির এর একটা সুরাহা হবে বলে তিনি আশা করছেন।