
বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ভ্রাম্যমাণ মাটি পরীক্ষা কার্যক্রম, যা চলবে আগামী ৫ জুন ২০২৫ পর্যন্ত। কৃষকের হাতে পৌঁছে দিতে বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদ, এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট।
এই কার্যক্রমের আওতায় মাত্র ২৫ টাকায় কৃষকরা মোবাইল ল্যাবের মাধ্যমে নিজেদের জমির মাটি পরীক্ষা করাতে পারবেন। গত সোমবার (৫ মে) রাজধানীর খামারবাড়িতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ অনুবিভাগ) মো. জাকির হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. সামিয়া সুলতানা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাকির হোসেন বলেন, “সঠিক মাটি বিশ্লেষণের মাধ্যমে জৈব সারের ব্যবহার বাড়বে, কেমিক্যাল সার কমবে এবং উৎপাদন বাড়বে।” তিনি চরাঞ্চলে ফলদ বৃক্ষ রোপণ ও পতিত জমির তথ্য সংগ্রহের দিকেও গুরুত্বারোপ করেন।
এই কর্মসূচির আওতায় দেশের প্রতিটি উপজেলায় ৫০ জন করে কৃষককে প্রশিক্ষণ দিয়ে মোট ৩,২০০ জন কৃষকের জমির মাটি পরীক্ষা করা হবে। এতে সহায়তা করছে ১০টি মোবাইল ল্যাব ভ্যান, যেগুলো সরাসরি মাঠ পর্যায়ে গিয়ে সেবা দিচ্ছে।
মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো. আনিসুর রহমান বলেন, “মাটি পরীক্ষা করে নির্ভুল সার প্রয়োগ করলে ২০–২৫ শতাংশ সার কম লাগে, আবার ফলনও সমান বা বেশি পাওয়া যায়।” তিনি জানান, সরকার প্রতিবছর যে ২৬ হাজার কোটি টাকা সার ভর্তুকি দেয়, তা সঠিক মাটি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় করা সম্ভব।
বর্তমানে দেশে ২৪টি স্থায়ী ল্যাব রয়েছে, যেখানে সারা বছর মাত্র ৫০ টাকায় মাটি পরীক্ষা করানো যায়। এছাড়া রবি ও খরিফ মৌসুমে মোবাইল ভ্যানের মাধ্যমেও সেবা দেওয়া হয়।
এদিন সকালে ‘আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্প (২০২৪–২৫)’ এর আওতায় চরাঞ্চলভিত্তিক একটি আঞ্চলিক কর্মশালাও অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কৃষকদের আগাম ফসল উৎপাদন ও বাজারদর বিষয়ে সচেতন হওয়ার তাগিদ দেন।
এই উদ্যোগ শুধু কৃষকের উৎপাদন বাড়াবে না, বরং টেকসই কৃষির পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আপনার এলাকায় এই মোবাইল ল্যাব কার্যক্রম সম্পর্কে কোনো প্রচার দেখা যাচ্ছে কি?