Sunday, 12 October, 2025

ত্বীন ফল চাষে স্বপ্নভঙ্গ তরুনের, দিশেহারা বেকার যুবক


নেওয়াজ শরীফ রানা একজন বেকার যুবক। একটি বিজ্ঞাপন দেখে ত্বীন ফলের চাষ করেছিলেন। সফল উদ্যোক্তা হবেন বলে স্বপ্ন দেখেছিলেন। স্বপ্ন পূরণে পরিবারের একমাত্র সম্বল তিনটি গরু বিক্রি করে ত্বীন চাষ শুরু করেন । প্রায় চার শতাধিক গাছ রোপণ করেন। ৩৫০ টাকা দরে কেনা চারা সহ জমি তৈরি, চারা রোপণ ও পরিচর্যায় এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ হয়ে যায় তার। কিন্তু ত্বীন ফল চাষে স্বপ্নভঙ্গ হল এই উদ্যমী যুবকের।

রোপনের চার মাস পর স্বপ্নের ত্বীন গাছে ফল আসে। নিদিষ্ট সময়ে পরিপক্ক হয় ফল। রঙিন স্বপ্নে বিভোর রানার ফল বিক্রির জন্য পাইকার ও খুচরা ফল ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করেন। কিন্তু বিধিবাম, একটি টাকার ফলও বিক্রি করতে পারেননি।

আরো পড়ুন
কৃষকের জন্য সেরা মোবাইল অ্যাপস: ফসল উৎপাদন ও বিপণন
কৃষকের-জন্য-সেরা-মোবাইল-অ্যাপস

কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার, বিশেষত স্মার্টফোন এবং মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। আধুনিক যুগে একজন কৃষক ঘরে বসেই প্রয়োজনীয় তথ্য, Read more

বাংলাদেশে ভেনামি চিংড়ি চাষ: সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়
বাংলাদেশের ভেনামি চিংড়ি

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চিংড়ি শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে পোশাক শিল্পের পরেই স্থান করে নিয়েছে। তবে Read more

যে ফলে তার স্বপ্নের উদ্যোক্তা হয়ে উঠার কথা সেই  ফলই দুঃস্বপ্ন হয়ে ঝরে পড়ছে। পাকা সেই ফল এখন পাখিতে এবং পচে নষ্ট হচ্ছে। এখন দিশেহারা তরুণ এই বেকার যুবক। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের সাবের হোসেনের ছেলে নেওয়াজ শরীফ রানা।

একই অবস্থা এই জেলার আরও চাষিদের

কেবল রানা নয়, একই রকম অবস্থা জেলার আরো আট যুবকের।  স্বল্প সময়ে অধিক লাভের আশায় চটকদার প্রচারণা দেখে ত্বীন চাষ করেছিলেন সকলেই। কিন্তু তাদের সে স্বপ্ন মাটির সাথে মিশে গেছে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ।

কালীগঞ্জ উপজেলার মাহমুদ হাসান লিটন জানান, ৪০০ চারা রোপণ করেন। চারা প্রতি ৩২০ টাকা মূল্যে ক্রয় থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত ৩ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে তার।

কিন্তু স্থানীয় বাজারে এই ফল কিনতে চায় না কেউ।  ঢাকায় পাঠিয়ে চেষ্টা করেছেন তিনি, কিন্তু সেখানেও ফল বিক্রি হয়নি। বরং পাঠানো ত্বীন ফল ফেলে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফল ব্যবসায়ী। এই ফল বেশি সময় সংরক্ষণ করে রাখা যায় না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার বিজয় কৃষ্ণ হালদার এর সাথে কথা হয়। তিনি জানান জেলায় এবার ১.৮৭ হেক্টর জমিতে আটজন কৃষক ত্বীন ফলের চাষ করেছেন।

এই ফলটি দেশীয় ডুমুরের মতো দেখতে হলেও সাইজে একটু বড় এবং পিছন দিক থেকে কিছুটা চ্যাপ্টা। তিনি বলেন এটা  নতুন ফল বিধায় এ নিয়ে এখনো অধিদপ্তর কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেনি।

তিনি জানান যে কৃষকরা এ ফলের চাষ শুরু করেছেন। অধিদপ্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে ফলটি আসলে কেমন। আর নতুন ফল বাজারে চলার বিষয়ে ক্রেতারাই বলতে পারে। তবে কৃষকদের সাথে কথা বলে খোঁজ খবর নিয়ে কিছু করা যায় কিনা তা দেখবে অধিদপ্তর।

0 comments on “ত্বীন ফল চাষে স্বপ্নভঙ্গ তরুনের, দিশেহারা বেকার যুবক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ