
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা উদ্ভাবন করেছেন নতুন এক জাতের হাঁস ‘বাউ-ডাক’, যা দেশি হাঁসের মতো দেখতে হলেও উৎপাদনে অনেক বেশি এগিয়ে। এই হাঁস বছরে দেয় তিনগুণ বেশি ডিম এবং উৎপাদন করে অধিক মাংস, যা ইতোমধ্যে খামারিদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
চেহারা দেশি হাঁসের মতো হলেও ‘বাউ-ডাক’ হাঁসের পার্থক্য রয়েছে কার্যকারিতায়। যেখানে সাধারণ দেশি হাঁস বছরে গড়ে ৭০ থেকে ৮০টি ডিম দেয়, সেখানে ‘বাউ-ডাক’ ডিম দেয় ২২০ থেকে ২৩০টি পর্যন্ত। মাত্র ১০ থেকে ১২ সপ্তাহেই প্রতিটি হাঁসের ওজন পৌঁছে যায় আড়াই থেকে তিন কেজিতে। ফলে এই হাঁস পালন দিন দিন আরও লাভজনক হয়ে উঠছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ‘বাউ-ডাক’ দ্রুত বৃদ্ধি পায়, মৃত্যুহার তুলনামূলকভাবে কম এবং বাজারমূল্য ভালো। এটি দেশি হাঁসের মতোই খাবারে অভ্যস্ত এবং লালনপালন করা যায় সাধারণ পোল্ট্রি শেডেও। সহজ পরিচর্যার কারণে প্রান্তিক খামারিদের জন্য এটি হয়ে উঠেছে একটি সম্ভাবনাময় জাত।
হাঁসটির উদ্ভাবক বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সামছুল আলম ভূঞা ও তার গবেষণা দল। দেশি ও বিদেশি হাঁসের সংকরায়ণের মাধ্যমে দীর্ঘ গবেষণার পর উদ্ভাবিত হয়েছে ‘বাউ-ডাক’। তিনি জানান, বাংলাদেশের জলবায়ুর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মতো করে গড়া হয়েছে এই হাঁসের জাত। এটি রোগ প্রতিরোধক্ষম, উৎপাদনে দক্ষ এবং বাজারে ব্যাপক চাহিদাসম্পন্ন।
অধ্যাপক সামছুল আলম বলেন, “যদি ‘বাউ-ডাক’ সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তাহলে খামারিরা লাভবান হবে, একই সঙ্গে দেশের পুষ্টির চাহিদাও অনেকাংশে পূরণ হবে।” প্রান্তিক পর্যায়ে হাঁসটি পৌঁছে দিতে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট গবেষণা ও সম্প্রসারণ সংস্থাগুলো।
‘বাউ-ডাক’ শুধু একটি হাঁস নয়, এটি হতে পারে বাংলাদেশের হাঁস শিল্পের সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত।