ডিমের খোসা অপ্রয়োজনীয় মনে করে আমরা ফেলে দেই। কিন্তু এই ডিমের খোসা দিয়ে জৈব সার তৈরি করা যায়। ডিমের খোসা উৎকৃষ্টমানের সার হতে পারে। তবে ডিমের খোসা উৎকৃষ্টমানের সার হিসেবে ব্যবহারের আগে এটি তৈরির পদ্ধতি জেনে নেয়া প্রয়োজন।
ডিমের খোসা গাছের ম্যাক্রো নিউট্রিয়েন্টস-এর চাহিদা পূরণ করে।
প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকে ডিমের খোসার মধ্যে।
এই উপকরণ থেকে গাছের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম কার্বনেট পাওয়া যায়।
ডিমের খোসায় আয়রন, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ফ্লোরিন, ক্রোমিয়াম ও মলিবডেনাম রয়েছে।
গাছে ক্যালসিয়ামের অভাব হলে ফুল, কাণ্ড ও শিকড়ের বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়।
এর অভাবে গাছের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিকৃতি হয়।
সেই সাথে পাতা ও ফলে কালো দাগ দেখা দেয়।
পাতার ধার ঘেঁষে দেখা দেয় হলুদ রং।
ডিমের খোসা দিয়ে জৈব সার তৈরি করার পদ্ধতি
প্রথমেই ব্যবহার উপযোগী করতে হবে ডিমের খোসাকে।
ডিমের খোসা সংগ্রহ করে সেটা ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে।
এরপর শুকনো ডিমের খোসাগুলো গুঁড়ো করে নিতে হবে।
এটিকে পাউডারে রূপান্তর করতে হবে।
তবে খেয়াল রাখতে হবে খোসাগুলো যেন ভালোভাবে মিহি হয়।
বড় দানার চেয়ে মাটির সাথে পাউডার দ্রুত মিশতে পারে।
যার কারণে গাছের গ্রহণ উপযোগী হয়ে উঠে মিনারেলসগুলো।
যেকোনো ধরনের গাছে ডিমের খোসা থেকে তৈরিকৃত সার ব্যবহার করা যায়।
টবে ডিমের খোসার প্রয়োগের পরিমাণ
৮ ইঞ্চি টবে ১ টেবিল চামচ, ১০ ইঞ্চি টবে ১ টেবিল চামচ, ১২ ইঞ্চি টবে ১.৫ টেবিল চামচ।
গাছের নিচে ডিমের খোসার গুঁড়া পানি দিয়ে পাতলা করে ব্যবহার করতে পারি।
এই সার বিভিন্ন শাক-সবজির পানিজনিত রোগ এবং পাতা হলুদ বর্ণ ধারণ রোগের চিকিৎসা করতে কার্যকর।
এছাড়া এই কম্পোস্ট গোলাপ গাছে ফুল ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
এই পদ্ধতিটি গাছ বৃদ্ধির প্রাথমিক পর্যায়ে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
আবার টবে মাটির মিশ্রণ প্রস্তুত করার সময় ডিমের খোসার চূর্ণ ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রথমে টবের মাটিকে নিড়ানি দিয়ে খুঁচিয়ে আলগা করে দিতে হবে।
তারপর ডিমের খোসার সার খুঁচানো মাটির উপর ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।
ডিমের খোসার সার প্রয়োগের কারণে মাটিতে পিঁপড়ে ও পোকামাকড় আক্রমণ করতে পারে।
তাই এর সাথে নিম বা খৈলের গুঁড়ো মিশিয়ে প্রয়োগ করলে এই আক্রমণ হবে না।
তবে সার প্রয়োগের জন্য সেরা সময় সান্ধ্যকালীন সময়।
ডিমের খোসা মিহি গুঁড়ো করে গাছে প্রয়োগ করলে শামুক, পোকামাকড় এবং অন্যান্য কীটপতঙ্গ থেকে উদ্ভিদ সুরক্ষিত থাকবে।