Thursday, 25 September, 2025

টোল-ট্যাক্স-চাঁদাবাজি, বিপদে পার্বত্য ফলচাষি


পার্বত্য আম চাষ

আম খেলে ঘুম হয়- প্রবাদবাক্যটি মনে আছে? তবে এবার আমেরই যেন ঘুম ধরে গেছে আর ঘুম উড়েগেছে আম চাষীদের। ফলন ভালো হলেও মুখে হাসি নেই তা সম্ভবত এবারই প্রথম। পার্বত্য অঞ্চল ঘুরে এসে পরিস্থিতি সেরকমই দেখা গেছে। পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে রাংঙ্গুইন, আম্রপালিসহ বিভিন্ন জাতের আমের প্রচুর ফলন হয়েছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের থাবা তা অনেকটা স্তিমিত করে দিয়েছে। তার সাথে যোগ হয়েছে সড়কের বিভিন্নস্থানে টোলবাজদের ‘অতিরিক্ত টোল, ট্যাক্স আরা চাঁদাবাজি। সবমিলিয়ে খুব বিপাকেই পড়েছে পার্বত্য অঞ্চলের চাষীরা। আর এ অবস্থা কেবল আমের মধ্যেই নয়, বরং সকলপ্রকার মৌসুমি ফলে।

ভ্রাম্যমান আদালত যদিও মাঝে মাঝে টহল দিয়ে ধরছে, জরিমানা করছে, শাস্তি দিচ্ছে, কিন্তু তাতে ইজারদারদের দৌড়াত্ম তো কমছেই না বরং দিন দিন বাড়ছে। প্রতিকারের আশায় চাষিরা করেছেন সংবাদ সম্মেলন, দ্বারস্থ হয়েছেন সরকারের বিভিন্ন দফতরে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছেনা, যেন হবেও না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে তারা এ ব্যাপারে কোন অভিযোগই পাননি, কেউ করেনিও। অভিযোগ পেলে তারা বিষয়টি ভালভাবে খতিয়ে দেখবেন।

পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন ফল বিষমুক্ত ও স-স্বাদু হবার খ্যাতি পেয়েছে অনেক আগেই। সারাদেশে তাই এর চাহিদা থাকে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী ই্ত্যাদি এলাকায় প্রচুর বিক্রয় হয়ে থাকে। কিন্তু এবছর করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে সমতলের ব্যবসায়ীরা তেমন একটা যাচ্ছেন না সেদিকে। স্বল্প কিছু ব্যবসায়ীরা এলেও টোল-ট্যাক্স-চাঁদাবাজিতে পড়ছেন চরম বিপাকে।

আরো পড়ুন
ধানের বাম্পার ফলন: ফুল ফোটার সময় কৃষকের করণীয়

বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য ধান। এ দেশের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা এই ফসলের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল। ধানের ফলন বাড়াতে হলে এর Read more

ঢাকায় শুরু হলো আগ্রোফরেস্ট্রি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং গ্রামীণ জীবিকা উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী আঞ্চলিক বিশেষজ্ঞ বৈঠক। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) Read more

বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের ভাষ্যমতে, মনে হয় প্রতি রাস্তার মোড়ে মোড়ে যেন মূর্তমান আতঙ্ক হয়ে আছে টোল। এই কালেকশনে আছে জেলা পরিষদ, বাজার ফান্ড, খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও রামগড় পৌরসভা। সেই সাথে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ও পুলিশ যেন পাল্লা দিচ্ছে একে অপরের সাথে। এতে দেখা যায় এক গাড়ি আম নিতে টোল-ট্যাক্স নামে আদায় করা হচ্ছে ১২-১৫ হাজার টাকা। তাছাড়া জেলার বিভিন্ন সংস্থা যে টোল নির্ধারণ করেছেন তার চেয়ে কয়েকগুন বেশি হারে আদায় করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ এর ভাষ্যমতে তিনি কোন অভিযোগ পাননি। পুলিশ চাঁদাবাজদের ব্যাপারে সচেতন উল্লেখ করে তিনি বলেন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক আইনের আওতায় আনা হবে। পৌরসভা মেয়র জানিয়েছেন আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়টি সমাধান করা হবে। যদিও টোল বা ইজারা সংশ্লিষ্ট কেউ এই ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি কোনভাবেই।

পরিসংখ্যান অনুসারে ৩২শ হেক্টর জমিতে এবছর আমচাষ হয়েছে, যা থেকে উৎপাদন হয়েছে ২৯ হাজার মেট্রিক টন আম। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে জেলার আমচাষীরা চরম ক্ষতির সম্মূখীন হবে বলে মনে করেন সচেতন ও সাধারণ মানুষেরা।

0 comments on “টোল-ট্যাক্স-চাঁদাবাজি, বিপদে পার্বত্য ফলচাষি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ