বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত কমছে ফসলি জমির পরিমাণ। ফলে খাদ্য উৎপাদনে এর প্রভাব পড়ছে। অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে। এতে ফসলি মাটির স্বাস্থ্য মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। কৃষিতে জৈব সার ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার বাড়ানো দরকার।
উপজেলা ভূমি ও মৃত্তিকা সম্পদ ব্যবহার নির্দেশিকা বা ইউনিয়ন সহায়িকা ব্যবহার করে বরেন্দ্র অঞ্চলের অম্লীয় মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
গত শনিবার দুপুরে এ প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যান তত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের এএসএমএসসিপি শীর্ষক কর্মসূচির অর্থায়নে এই প্রশিক্ষণ আয়োজিত হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করে।
তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা।
এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের গবেষণা অনু বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কমলারঞ্জন দাশ।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র বীজ ফেলে দিলেই বাংলাদেশের যেকোনো মাটিতে ফসল হয়।
কিন্তু এমন অনুকূল পরিবেশ অনেক দেশেই নেই।
তাই নানা প্রতিকূলতার মধ্যেই তারা জমি চাষাবাদ করে থাকে।
অথচ এমন মাটি পেয়েও আমাদের দেশের মানুষ এর সঠিক ব্যবহার করেন না।
তিনি আরও জানান যে, আগে পানির অভাবে বরেন্দ্র অঞ্চলের জমিতে ফসল ফলানো যেত না।
কিন্তু সরকারের গৃহিত নানাবিধ পরিকল্পনার মাধ্যমে পরিস্থিতি বদলে গেছে।
এর প্রভাবে এখন জমির দাম বেড়েছে বরেন্দ্র অঞ্চলের।
কারণ বরেন্দ্র অঞ্চলের জমিতে এখন বিভিন্ন ফলের চাষাবাদ করা যায়।
তবে অধিক হারে জৈব সার ব্যবহার করতে হবে এসব জমিতে।
সেই সাথে মাটির গুণাগুণ বৃদ্ধি ছাড়াও শস্য নির্বাচনে ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দিতে হবে।
বরেন্দ্র অঞ্চলের জমিতে এমন ফসল চাষাবাদ করতে হবে যা কম পানিতে হয়ে যায়।
এক্ষেত্রে তিনি তুলা চাষের জন্য পরামর্শ দেন।
সভাপতির বক্তব্য প্রদান করেন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের ফিল্ড সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক মো. কামরুজ্জামান।
তিনি বলেন, মারাত্মক ক্ষতির মুখে রয়েছে দেশের ফসলি মাটির স্বাস্থ্য।
মাটিতে অধিক হারে জৈব সারের ব্যবহার করতে হবে।
এতে মাটির গুণাগুণ বৃদ্ধি পাবে ও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে।
দেশের সব মাটির পিএইচ কম হলেও বরেন্দ্র অঞ্চলের মাটি খারীয়।
তাই এই মাটিতে বেশি করে চুনের ব্যবহার করতে হবে বলে তিনি জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোখলেসুর রহমান, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জমির উদ্দিন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ মো. রোকন-উজ্জামান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ।