সুগন্ধি ফুল হিসেবে বেলি ফুলের খুব কদর। ফুলের তোড়া বা ফুলের মালায় বা গাজরা তৈরিতে হিসেবে বেলি ফুলের ব্যাবহার হয়। সেদিক বিবেচনা করলে এটি একটি অর্থকরী ফুল।
বেলি বা বেলী (ইংরেজি: Arabian jasmine), (বৈজ্ঞানিক নাম: Jasminum sambac) জেসমিন গণের এক প্রকারের সুগন্ধী সাদা ফুল।
সাদা বেলি ফুল প্রজাতির গাছের উচ্চতা এক মিটার হতে পারে। এদের কচি ডাল রোমশ। পাতা একক, ডিম্বাকার, ৪-৮ সেমি লম্বা হয়।
তাই জেনে নেয়া যাক জমিতে বেলি ফুলের চাষ করা যায় কিভাবে।
আমাদের দেশে তিন জাতের বেলি ফুল দেখা মেলে। যথা- মাঝারি ও ডাবল ধরনের, সিঙ্গেল ও অধিক গন্ধযুক্ত, বৃহদাকার ও ডাবল ধরনের।
বেলি ফুল বংশবিস্তার করে ৩ ভাবে। গুটি কলম, দাবা কলম ও ডাল কলম। এই ৩ পদ্ধতির মাধ্যমেই বংশবিস্তার হয় বেলি ফুলের।
বেলি ফুলের চাষ করবেন কিভাবে ?
ভারি এঁটেল ও বেলে মাটিতে বেলি ফুল চাষ করা যায় না। আর সব ধরনের মাটিতে বেলি ফুলের চাষ করা সম্ভব । জমিতে প্রয়োজনীয় পানি সেচের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
যথেষ্ট পানি নিকাশের ভালো ব্যবস্থা থাকতে হবে। চাষ ও মই দিয়ে জমির মাটি ঝুরঝুরা ও সমান করে নিতে হবে। জমি তৈরির সময় বিভিন্ন রকম সার যেমন জৈব সার, ইউরিয়া, ফসফেট, এমপি ইত্যাদি প্রয়োগ করতে হবে।
প্রতি ১ মিটার পর পর চারা রোপণ করতে হবে। চারা রোপণ করার পর ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে। এরপর পানি সেচ দিতে হবে।
কলম বা চারা তৈরি করা যায় গ্রীষ্মের শেষ থেকে বর্ষার শেষ পর্যন্ত । চারা ও সারির দূরত্ব ৫০ হতে হবে ৫০ সেমি। চারা লাগানোর জন্য গর্ত খুড়তে হবে। এরপর গর্তের মাটিকে রোদে শুকাতে হবে।
জৈব সার ও কাঠের ছাই মিশিয়ে গর্ত ভরাট করতে হবে। এক একটি গর্তে একটি বেলির কলম বসাতে হবে। কলম বসানোর জন্য বর্ষা বা বর্ষার শেষ সময় ভালো। বসন্তকালেও কলম তৈরি করা যায় কিন্তু সেচের ব্যবস্থা ভালো থাকতে হয়।
বেলি ফুলের জমিতে সবসময় রস থাকার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে সেচ দরকার। গ্রীষ্মকালে হলে ১০-১২ দিন, শীতকালে হলে ১৫-২০ দিন পরপর সেচ দিতে হবে। সময়মতো বৃষ্টি না হলে জমির অবস্থা বুঝে ২-১ টি সেচ দেওয়া প্রয়োজন হবে বর্ষাকালে।
বেলি ফুলের গাছের পরিচর্যাঃ
প্রতি বছর বেলি ফুলের গাছের ডাল-পালা ছাঁটাই করতে হবে। ছাঁটাইয়ের কয়েকদিন পর জমিতে সার প্রয়োগ করতে হয়।
ফেব্রুয়ারি- জুলাই মাস পর্যন্ত গাছে ফুল ফোটে। প্রতিবছর এটি বাড়ে। লতানো বেলিতে ফলন সাধারণ বেলির চেয়ে বেশি হয়।