পিরোজপুর নাজিরপুর উপজেলার বেলুয়া নদী অঞ্চল স্থানীয়দের কাছে বৈঠাকাটা নামে পরিচিত। এই নদীর অবস্থান গোপালগঞ্জ, পিরোজপুর আর বরিশাল এই তিন জেলার মোহনায়। হাজারও লোক এই নদীপথ দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে। এখানেই বসে জমজমাট ভাসমান সবজির হাট নিয়মিত। সপ্তাহে দুইদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ভাসমান সবজি হাটের দখলে থাকে। নদীর নাজিরপুর অংশে বসে এই জমজমাট ভাসমান সবজির হাট। এই সময়টায় নদী ক্রেতা-বিক্রেতাদের বিচরণে মুখর থাকে। নদীর এই অংশে অন্য জেলা থেকেও পাইকারি ক্রেতা সবজি কিনতে জড়ো হন।
উপজেলা কৃষি অফিস এর দেয়া এক তথ্য অনুযায়ী, এই ভাসমান হাটে সপ্তাহে প্রায় ২২ লাখ টাকার কেনাবেচা হয়।
এই ভাসমান সবজি হাট প্রতি শনি ও মঙ্গলবার বসে।
খাল বেয়ে এর আগের রাত থেকে চিতলমারী, মোড়েলগঞ্জ, টুঙ্গিপাড়াসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলার কৃষকরা ডিঙি নৌকায় করে সবজি নিয়ে ভিড়তে থাকেন নাজিরপুরে।
বাজার ভোর সাড়ে ৫টার মধ্যে সরগরম হয়ে ওঠে।
ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রলার ও ছোটবড় নৌকা নিয়ে এই হাটে আসেন।
জালাল মুন্সি নামক একজন ব্যবসায়ী এই ভাসমান সবজি হাটের নিয়মিত বিক্রেতা। তিনি বলেন, হাট স্বাভাবিক সময়ে ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে।
কিন্তু এখন করোনা পরিস্থিতির দরুন বেলা ১২টার আগেই হাট ভেঙে যায়।
তিনি আরও বলেন, এই হাটে মৌসুমি সকল ধরনের শাক সবজি পাওয়া যায়।
এখন সেখানে বরবটি, কুমরা, পুঁইশাক, করল্লা, পটল, কাঁচকলা ও লাউ বেশি বিক্রি হয়।
কেবল শাক-সবজি নয়, সেইসঙ্গে বিভিন্ন গাছের চারাও পাওয়া যায়।
স্থানীয় কৃষক গোপাল সেন। তিনি জানান, কয়েক হাজার কৃষক বৈঠাকাটা নদীকে ঘিরেই এখন বসবাস করেন।
সে সকল কৃষকের উৎপাদিত ফসল বেচাকেনার একমাত্র স্থান এই ভাসমান হাট।
এখানে ন্যায্যমূল্য পাওয়ার কারণে আশপাশের গ্রামের কৃষকও পণ্য বিক্রি করতে এই হাটে আসেন।
প্রায় ৭০ বছর ধরে ভাসমান এই সবজির হাট চলছে বলে জানিয়েছে কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিগ্বিজয় হাজরা।
তিনি জানিয়েছেন, প্রতি হাটে ১০ থেকে ১১ লাখ টাকার বেচাকেনা হচ্ছে চলতি মৌসুমে।
সে হিসাবে ধরলে সপ্তাহে প্রায় ২২ লাখ টাকার সবজি বিক্রি হচ্ছে।
শীতকালে তা বেড়ে ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকার কেনাবেচা হয় প্রতি হাটে।