Wednesday, 17 December, 2025

চাঁপা ফুলের সবিস্তর পরিচিতি, প্রথম পর্ব


চাঁপা ফুল এর খ্যাতি মূলত সুগন্ধের জন্য। চাঁপা ফুলের কিন্তু বিশ্বজোড়া খ্যাতি। আর চাপা কিন্তু কেবল একটি নয়।চাঁপা ফুলের সবিস্তর পরিচিতি জানতে গেলে দেখা যায় চাঁপা ফুলের সংখ্যা বেশ কয়েকটি।

বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে একটির সাথে অপর ফুলের সঙ্গে বৈশিষ্টগত অনেক পার্থক্য রয়েছে। সেই সকল চাপা ফুলের পরিচিতি নিয়ে এই ধারাবাহিক লিখনি- চাঁপা ফুলের সবিস্তর পরিচিতি।

আরো পড়ুন
পাহাড়ে বারি-৪ লাউ চাষে সাফল্য: কাপ্তাইয়ের রাইখালী গবেষণা কেন্দ্রে বাম্পার ফলন
লাউ চাষের বাম্পার ফলন

দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবশেষে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলাস্থ রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র (পিএআরএস) বারি-৪ জাতের লাউ চাষে বড় ধরনের সাফল্য Read more

সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান

বাংলাদেশে সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণে সকল পক্ষের স্বার্থকে সমন্বিত করে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি Read more

সুবাসিত জহুরিচাঁপা

মূলত জাভা দ্বীপপুঞ্জের গাছ জহুরিচাঁপা। যার ইংরেজি নাম magnolia pumila. এটি এক ধরণের চিরসবুজ ও ঝোপালো গাছ। ‍উচ্চতা প্রা য় দুই মিটার। পাতার আকার ভল্লাকার। পাতা প্রায় ৭-১২ সেন্টিমিটার লম্বা ও খসখসে প্রকৃতির।

গ্রীষ্ম-বর্ষায় সময়ে ফুল ফোটে। সন্ধ্যার আগে আগে পাতার গোড়া থেকে ফোটে । ফুলের সৌন্দর্য নেহায়েত কম নয়। হলদেটে-সাদা, প্রায় তিন সেন্টিমিটার চওড়া হয়। ফুলটি সবুজ বৃত্তাংশে সামান্য ঢেকে থাকে, পাপড়ির সংখ্যা ছয়-নয়টি। এই ফুলের বংশবৃদ্ধি হয় কলমে চাষে।

মিষ্টি গন্ধের কাঁঠালিচাঁপা

এই ফুলের গাছ সহজলভ্য।  কিন্তু ফুল ততটা সহজে দেখা যায় না। কারণ হিসেবে বলা যায় ঘন পাতার আড়ালে ফুল লুকিয়ে থাকে। খুব সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ফুল ফোটে। যদিও কাঁঠালিচাঁপার তেমন কদর আমাদের দেশে হয় না। এর আরেক নাম artobotrys odoratissimus। প্রায় সকল বাগানেই  এই গাছ চোখে পড়ে। এই গাছের বড় ঝাড়, লতা কাষ্ঠল। গাছ ছেঁটে দিলে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে কিন্তু বড় হলে ভারে নুয়ে পড়ে। ডা

লগুলো কাঁটায় রূপান্তরিত হয়ে থাকে। উজ্জ্বল সবুজ রঙের পাতা। পাতা আকারে আয়ত-ভল্লাকার। গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে ফুল ফোটে। বছরের অন্য সময়ে হঠাৎ দু-একটির দেখা পাওয়া যায়।

পরিণত ফুল পাকা কাঁঠালের গন্ধ ছড়িয়ে দেয়। ফুল শনাক্তকরণে এই গন্ধ অনেক সহায়তা করে। রং হলদেটে বা সোনালি হলুদ রঙের এই ফুলে পাপড়িসংখ্যা ৬, পাপড়িগুলো খোলা।

ফুলের বোঁটা বাঁকা, বদ্ধ এবং গোলাকার। এটি পাখিদের কাছে খুব প্রিয়। এই ফুলের আদি আবাস কিন্তু ইন্দো-মালয় অঞ্চলে।

বিখ্যাত স্বর্ণচাঁপা

মূলত পাহাড়ি প্রজাতির ফুল স্বর্ণচাঁপা। সমতল অঞ্চলে স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে। এর বৈজ্ঞানিক নাম- michelia champaca. মূলত একেই চাপা ফুল বলা হয়।

মৈয়মনসিংহ গীতীকায় এই ফুলের উল্লেখ প্রমান করে যে প্রাচীনকাল থেকে এ ফুলের প্রতি মুগ্ধ হয়েছে মানুষ। স্বর্ণচাঁপা গাছের কাণ্ড সরল, উন্নত এবং মসৃণ।  কান্ডের রঙ ধূসর। পাতার আকৃতি চ্যাপ্টা, রঙ উজ্জ্বল-সবুজ। একক ফুল কাক্ষিক। রঙ ম্লান-হলুদ, রক্তিম অথবা প্রায় সাদা হয়ে থাকে। এই ফুলের পাপড়িসংখা প্রায় ১৫টি। এই ফুলের বর্ণগত বিচিত্রতায় স্বাভাবিক।

বিভিন্ন কারণ যেমন- মাটি, আবহাওয়া, পারিপার্শ্বিক অবস্থা কারণে রঙের তারতম্য ঘটে। চাঁপা তীব্র সুগন্ধিযুক্ত ফুল। গ্রীষ্মের -শরৎ অবধি এই ফুল থাকে।

ফুল শেষ হয়ে গেলে গুচ্ছবদ্ধভাবে ফল আসে। এর ফল দেখতে অনেকটা আঙুরের মতো যা কাক ও শালিকের প্রিয় খাদ্য হিসেবে বিবেচিত। গাছের বাকল ও ফুল বাতরোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে।

0 comments on “চাঁপা ফুলের সবিস্তর পরিচিতি, প্রথম পর্ব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ