নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ‘সেভেন’ জাতের আগাম আলু চাষে কৃষকরা এ বছর দারুণ সাফল্য অর্জন করেছেন। শীতকালীন এই ফসল, যা ‘ভাগ্য বদলের ফসল’ হিসেবে পরিচিত, কৃষকদের আয়ের নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর আলু বিক্রি করে কিশোরগঞ্জে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার আয় হবে।
কৃষকরা জানিয়েছেন, প্রতি বিঘা জমিতে তারা ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা লাভ করছেন। এই উচ্চ আয়ের ফলে কিশোরগঞ্জের কৃষকরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন। কিশোরগঞ্জ উপজেলায় এ বছর ৬,৭৮০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন।
কৃষি বিভাগ থেকে জানা গেছে, সঠিক সময়ে চাষ ও উত্তোলনের কারণে কৃষকরা উচ্চ ফলন এবং ভালো বাজারদর পাচ্ছেন। নভেম্বরের ২০ তারিখ থেকে আলু উত্তোলন শুরু হয় এবং প্রথম দিকে প্রতি কেজি আলু ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে কেজি প্রতি ৭২-৭৩ টাকা দরে আলু বিক্রি হচ্ছে।
ইসমাইল গ্রামের কৃষক আরজু জানান, ৮.৫ বিঘা জমিতে চাষ করা আলুর বিক্রির মাধ্যমে তিনি প্রায় ৫ লাখ টাকা লাভ করেছেন। একইভাবে বাহাগিলী ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেন জানান, ১৫ বিঘা জমিতে চাষ করে তিনি সাড়ে ৯ লাখ টাকা লাভ করেছেন।
অন্য কৃষক নিলু বিডিআর বলেন, “আমি ৮ বিঘা জমিতে সেভেন জাতের আলু চাষ করেছি এবং প্রতি বিঘা থেকে ৬৩ হাজার টাকা লাভ করেছি।”
কিশোরগঞ্জের জমি উঁচু ও বালু মিশ্রিত হওয়ায় সেভেন জাতের আলু চাষ এখানে অত্যন্ত সফল। এই ফসল মাত্র ৫৫ দিনে উত্তোলন করা যায়। আলু উত্তোলনের সময় পুরো এলাকাটি উৎসবের মাঠে রূপান্তরিত হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, “দেশের প্রথম আলু উত্তোলন এ অঞ্চলে হয়। এতে কৃষকরা বেশি দাম পান। তাই এটি এখানকার কৃষকদের জন্য ভাগ্য বদলের ফসলে পরিণত হয়েছে।”
কিশোরগঞ্জের আগাম আলু চাষ শুধু কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করেনি, বরং সঠিক পরিকল্পনা ও প্রযুক্তির মাধ্যমে কীভাবে কৃষিকাজ লাভজনক হতে পারে, তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সেভেন জাতের আলুর সাফল্য এখানকার কৃষকদের জন্য এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।