Thursday, 12 December, 2024

সর্বাধিক পঠিত

আসামে প্রকাশ্যে গরুর মাংস খাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা


কুরবানির গরু

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে প্রকাশ্যে গরুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা রেস্তোরাঁ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের স্থানেও প্রযোজ্য। তবে ব্যক্তি পর্যায়ে বাড়িতে বা ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে মাংস খাওয়া যাবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বুধবার এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে আসামে মন্দির বা ধর্মীয় স্থানের আশেপাশে গরুর মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ ছিল। নতুন আইনটি আগের নিয়মকে আরও প্রসারিত করেছে।

ভারতের গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে বিতর্ক

আরো পড়ুন
আধুনিক আলু চাষে কীটনাশকের ব্যবহার ও সতর্কতা

আলু চাষে কীটনাশক ব্যবহারের প্রধান লক্ষ্য হলো পোকামাকড় ও রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ করা, যা আলুর উৎপাদন ও গুণগত মান বজায় রাখতে Read more

আলুর আধুনিক চাষ পদ্ধতি এবং পরিচর্যা

আধুনিক চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করলে আলুর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং চাষীদের লাভ বাড়ে। এতে উন্নত প্রযুক্তি, সঠিক জাত নির্বাচন, সুষম Read more

ভারতে জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ হিন্দু ধর্মাবলম্বী, যারা গরুকে পবিত্র মনে করেন। এই কারণে গরুর মাংস খাওয়া ভারতে একটি সংবেদনশীল বিষয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি শাসিত বেশ কয়েকটি রাজ্যে গরু জবাই ও গরুর মাংস খাওয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

ভারতের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে গরু জবাই নিষিদ্ধ। তবে কিছু রাজ্যে মহিষের মাংস খাওয়া বৈধ।

আসামে নতুন নিষেধাজ্ঞা

২০২১ সালে আসামে একটি আইন কার্যকর হয়, যেখানে হিন্দু, জৈন ও শিখ সম্প্রদায়ের বাসস্থানের আশেপাশে এবং মন্দিরের কাছে গরুর মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এবার নতুনভাবে প্রকাশ্যে গরুর মাংস খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা যুক্ত করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী শর্মা বলেছেন, এই নিয়মটি আগের আইনের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

রাজনৈতিক বিতর্ক

নতুন নিষেধাজ্ঞা এমন সময় এলো, যখন কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, মুখ্যমন্ত্রী শর্মা মুসলিম অধ্যুষিত সমাগুড়ি আসনে উপনির্বাচনে জেতার জন্য ভোটারদের গরুর মাংস সরবরাহ করেছেন। শর্মা এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা বলেছেন, ‘কংগ্রেস চাইলে আমি পুরো আসামে গরুর মাংস সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে প্রস্তুত।’

সমালোচনা ও বিতর্ক

বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এই নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে বলছে, এটি মানুষের খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ। সর্বভারতীয় ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের সদস্য হাফিজ রফিকুল ইসলাম মন্তব্য করেছেন, ‘যদি গোয়া বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যে গরুর মাংস নিষিদ্ধ না হয়, তাহলে আসামে কেন?’

উল্লেখ্য, বিজেপি শাসিত গোয়া ও অরুণাচল প্রদেশে গরুর মাংস বিক্রি এবং খাওয়া বৈধ।

সামাজিক প্রভাব

গরুর মাংস দারিদ্র্যপীড়িত দলিতদের জন্য সস্তা প্রোটিনের উৎস। এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা তাদের খাদ্য নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যদিকে, গরু নিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং গরুর মাংস ব্যবসায়ীদের ওপর হামলার ঘটনা ভারতে একাধিকবার ঘটেছে।

নতুন নিষেধাজ্ঞা আসামের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে চলছে বিতর্ক।

0 comments on “আসামে প্রকাশ্যে গরুর মাংস খাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *