পেয়ারা, আমড়া ও মাল্টার চাষ ছিল পিরোজপুরে। এর পর সেখানকার কৃষকরা আমলকী চাষে কয়েক বছর ধরে লাভবান হচ্ছিলেন। এতে প্রতিবছর আমলকীর চাষ বাড়ছিল। কিন্তু এবার আমলকীতে দাম পাচ্ছেন না কৃষকেরা, গাছেই নষ্ট হচ্ছে সব। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে আমলকীতে দাম পাচ্ছেন না তারা।
পাইকারদের সাথে দাম নিয়ে বনিবনা হচ্ছে না কৃষকদের
এ এলাকার আমলকী খেতে মিষ্টি ও সুস্বাদু হয়।
সে কারণে দেশে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছিলেন পাইকাররা।
গাছ থেকেই পাইকাররা কিনে নিয়ে যেতেন আমলকী।
কিন্তু এ বছর সম্পূর্ণরূপে ভিন্ন দৃশ্য দেখা গেছে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পাইকারি ক্রেতাদের সঙ্গে দামে বনাবনি হচ্ছে না তাদের।
সেকারণেই এবার গাছেই নষ্ট হচ্ছে আমলকী।
সাধারণ ভাবে প্রতি বছর আগস্ট মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত আমলকীর প্রধান মৌসুম ধরা হয়।
কিন্তু এবার দাম কম থাকার কারণে অনেকেই আমলকী বেচতে পারেননি।
ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফলটি এখন গাছেই নষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, দক্ষিণের জেলাটিতে একসময় শুধু ঔষধি ফল হিসেবে আমলকীর গাছ লাগানো হত।
কিন্তু এখন বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ হচ্ছে।
জেলার চাষিরা অনাবাদি জমিতে আমলকী চাষ করে সফল হওয়ার প্রমাণ দেখিয়েছেন।
আমলকীগাছ আছে অনেকের বাড়ির আঙিনায় দেখা যায়।
কয়েক বছর ধরে আমলকীর উৎপাদন ও দাম ভালো হওয়ায় লাভবান হচ্ছিলেন সবাই।
তবে এবার অনেকে আমলকী বেচতেই পারেননি কোনভাবে।
পিরোজপুর সদর উপজেলার টোনা ইউনিয়নের চাষি মনির শেখ ও মামুন শেখ।
তারা জানান যে, গত বছর করোনার মধ্যেও প্রায় লাখ টাকার আমলকী বিক্রি করেছেন।
আগের চেয়ে ফলটি এখন অনেক বেশি চাষ হচ্ছে।
ঢাকার ব্যবসায়ীরা এ জেলার আমলকী কিনে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন।
তবে এই বছর পাইকাররা গ্রামে যাচ্ছেন না তেমন।
যাও বা কেউ কেউ যাচ্ছেন তারা ন্যায্য দাম দিচ্ছেন না।
সেকারণেই এখন বিক্রি করতে না পারায় গাছেই ফল নষ্ট হচ্ছে।
পিরোজপুর কৃষি বিভাগ ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফলটির উৎপাদন দিন দিন বাড়ার নতুন সম্ভাবনা দেখছিল।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম সিকদার।
তিনি জানান, জেলায় প্রতিটি বাড়িতে কম করে হলেও ২-৩টি করে আমলকীগাছ দেখা যায়।
এখন অনেক পরিবার বাণিজ্যিকভাবে আমলকী চাষ করছেন। প্রায় ৪৪ হেক্টর জমিতে এ বছর ৪৫৮ টন আমলকী উৎপাদন হয়েছে।