খুলনায় আমন ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। বিঘাপ্রতি ফলন ভালো হলেও মিলছে না কাঙ্খিত দাম। সেই সাথে ব্যবসায়ীরাও নগদ টাকায় কিনতে চাচ্ছেন না ধান। তবে নানান শর্ত ও ঝামেলার কারণে সরকারি খাদ্য গুদামে চাল দিতেও আগ্রহী নয় চাষিরা। অপরদিকে ধানের দাম বাড়ার আশায় বসে দিন গুণলেও কাটছে না শংকা। সব মিলিয়ে আমন ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে আগ্রহী নয় কৃষক
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দাম বাড়ার কারণে ধান উৎপাদনের খরচ বেড়েছে।
কিন্তু এর বীপরিতে বাজারে ধানের দাম গত মৌসুমের তুলনায় কম।
তাছাড়া ধান খামারে ওঠানোর পরপরই ফড়িয়ারা নগদ টাকায় ধান কিনলেও এবার তাথেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তারা।
কোনোভাবেই নগদ টাকা দিয়ে ধান নিতে চাচ্ছেন না তাঁরা।
ধান না দেবার বিষয়ে তারা জানান যে চরম খারাপ যোগাযোগ ব্যবস্থা আর নানা ঝামেলার কারণে খাদ্যগুদামে ধান দিতে তাদের অনীহা।
খুলনা জেলার দাকোপে সবচেয়ে বেশি আমন ধানের চাষ হয়।
কিন্তু এই উপজেলায় সরকারি ন্যায্যমূল্যে আমন ধান সংগ্রহ করা হয়নি এক ছটাকও।
এমনকি ডুমুরিয়া, তেরখাদা, দিঘলিয়া ও নগর এলাকাতেও কোনো ধান সংগ্রহ করা হয়নি।
যে তয়টি উপজেলায় ধান সংগ্রহ করা হয়েছে তাও নামমাত্র।
তাই খুলনা জেলা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রায় অনেক পিছিয়ে আছে।
গত বছরের ৭ নভেম্বর থেকে খুলনায় ধান সংগ্রহ ও চাল কেনার অভিযান শুরু হয়।
এই কার্যক্রম ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
গত আড়াই মাসে মাত্র আট শতাংশ ধান সংগৃহীত হয়েছে।
ধানের বর্তমান বাজারদরকেই সংগ্রহ পরিস্থিতি ভয়াবহ খারাপ হওয়ার পেছনে প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে জানা যায়, চলতি আমন সংগ্রহ মৌসুমে জেলার ১১টি গুদামে ধান সংগ্রহ করার কথা রয়েছে।
মোট ৪ হাজার ৭৮৪ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তাছাড়া জেলায় সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪৯ মেট্রিক টন।
১০৯টি মিলের সঙ্গেচাল সংগ্রহের জন্য চুক্তি হয়েছে।
৪০ টাকা কেজি দরে কেনা হচ্ছে সেদ্ধ চাল।
জেলায় গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৮৬ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে।
খুলনা জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ বাবুল হোসেন।
তিনি বলেন, সরকারিভাবে নির্ধারিত ধানের দাম এর চেয়ে স্থানীয় বাজারে বেশি দামে ধান বেচাকেনা হচ্ছে।
যার কারণে খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ করতে কৃষকেরা আগ্রহী হচ্ছেন না।
তিনি দাবি করেন গুদামে ধান এনে যাতে কেউ ভোগান্তিতে না পড়েন, সে ব্যাপারে তাঁরা তৎপর আছেন।