পৃথিবীর প্রাচীনতম বৃক্ষ প্রজাতির উদ্ভিদ হল গিংকো বিলোবা। অদ্ভুত ক্ষমতাধর এই গাছ অনেকের কাছে ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত। প্রাচীন এই বৃক্ষকে জীবন্ত জীবাশ্ম রূপে পরিগণিত করা হয়। আদিম বৃক্ষ গিংকো বিলোবা এর সবচেয়ে পুরোনো ফসিলটির বয়স প্রায় ২৭ কোটি বছর। উদ্ভিদরাজ্যে জিংকগোফাইটা নামক বিভাগের একমাত্র জীবিত সদস্য আদিম এই গাছ। অসাধারণ এই আদিম গাছ বৈজ্ঞানিক গবেষণার কেন্দ্রে ঔষধি সম্ভবনার জন্য। তাই চলুন জেনে নেয়া যাক আদিম বৃক্ষ গিংকো বিলোবা সম্পর্কে।
এই বৃক্ষ কে ভেষজ উদ্ভিদও বলা হয়। তাই আদিম বৃক্ষ গিংকো বিলোবা ঔষধি হিসেবে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
আদিম বৃক্ষ গিংকো বিলোবা
এক সুদৃশ্য বৃক্ষ জাতীয় গাছ গিংকগো বিলোবা। দীর্ঘজীবী এই গাছ এক হাজার বছরেরও বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারে।
চিন দেশে পাওয়া যায় এমন গিংকো গাছ রয়েছে যার বয়স প্রায় ২৫০০ বছর।
দীর্ঘজীবী হবার কারণে চীনে একে কল্যাণ এবং সুস্বাস্থ্যের প্রতীক রূপে বিবেচনা করা হয়।
গিংকো বিলোবাপুরোপুরি বাড়লে তা ডালপালা ছড়িয়ে শঙ্কুর মত আকৃতি নেয়।
গাছ লম্বায় ৬০-১০০ ফিট লম্বা হয়ে থাকে।
পাতাগুলো দেখতে অনেকটেই হাত-পাখার মতো।
গিংকো বিলোবা একটি পর্ণমোচী গাছ।
সবুজ রঙের পাতাগুলো শরৎকালে ঝরে পড়ার আগে উজ্জ্বল সোনালি রঙ ধারণ করে।
এই গাছ খুবই শক্ত প্রকৃতির গাছ, যেকোন রোগ, ফাংগাল ইনফেকশন বা পোকামাকড়ের আক্রমণ ঠেকিয়ে দিতে পারে।
জানা যায় ১৯৪৫ সালের ৬ ও ৯ আগষ্ট জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে যে পারমাণবিক বোমা হামলা করা হয় তাতে সকল কিছু মাটিতে মিশে যায়।
কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সেই হামলা থেকে গিংকো বিলোবার ছয়টি গাছ বেঁচে গেছিল।
সেখান থেকে েএকটি গাছের ডাল থেকে গাছ উৎপাদন করে তার একটি সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত রেডক্রস এর হেড অফিসের সামনে রোপন করা হয়।
এই গাছের শিকড় মাটির অনেক গভীরে প্রবেশ করতে পারে।
গিংকো বিলোবা গাছের শিকড়গুলোর দৃঢ়তার জোরে এটি ভূমিক্ষয় ও বায়ু প্রবাহের মোকাবিলা করতে পারে।
প্রাচীন এই গাছকে অন্যদিকে জীবনের গাছ বলা হয়।
গাছ পুরুষ এবং স্ত্রী, দু ধরনেরই হয়ে থাকে।
পরাগায়নের ফলেই স্ত্রী গাছে বীজের উৎপাদন হয়।
গাছটি একটি জিমনোস্পার্মীয় গাছ।
ঔষধি গুণাগুণ
এই গাছের বহু ঔষধি গুণাগুণ এর পাশাপাশি খুব বেশি মাত্রায় মাল্টি ভিটামিন এবং মিনারেল পাওয়া যায়।
শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টির জোগান দেয় এই দুই উপাদান।
অন্যদিকে অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-প্লেটলেটেরো ইত্যাদি উপাদান থাকে।
গাছের পাতার সাথে সাথে এর শাখা প্রশাখাওে ঔষধি গুণ সম্পন্ন হয়।
রক্ত চলাচল সুষ্ঠু করার জন্য এর পাতার ব্যবহার উল্লেখযোগ্য।
গাছ থেকে প্রাপ্ত নির্যাস উদ্বেগ, ডিপ্রেশন ও মনযোগ ইত্যাদি রোগে খুব কাজে দেয়।
এছাড়া কর্মশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
বিভিন্ন ব্যাথা কমাতেও সাহায্য করে।