এবার নওগাঁ জেলায় আউশ ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। কিছুদিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। যার কারণে রোদ কম হওয়ায় পাতার ক্লোরোফিল কম হয়েছে। এ কারণে কিছু এলাকার জমিসমূহে ঠিকমতো কুশিবর্ধন হতে পারেনি। আর এই কারণে ফলন কিছুটা কম হয়েছে।
উত্তরের কৃষিপ্রধান জেলা নওগাঁ। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ হাজার ৮২৫ হেক্টর কম জমিতে এই মৌসুমে আউশের রোপণ হয়েছে। নানা কারণে ফলনও হয়েছে কম। এতে শঙ্কা দেখা দিয়েছে আউশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে।
কৃষকদের বক্তব্য অনুযায়ী এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে ছিল না। পাশাপাশি পোকার আক্রমণ হওয়ায় এই ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। কিন্তু কৃষি বিভাগ আশা করছে, যে সময় আছে তাতে ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় আউশ ধান রোপণের লক্ষ্য ছিল ৭০ হাজার ৭৩৫ হেক্টর। কিন্তু ৫৭ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে ধান রোপণ হয়েছে। ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫২০ টন আউশ উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও ইতিমধ্যে জেলার ৫ হাজার ৮০ হেক্টর ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে।
জেলার বেশ কিছু অঞ্চল ঘুরে ঘুরে দেখা যায় যে, কৃষকরা আউশ কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত। কৃষকদের অভিযোগ, ফলন যেমন কম তেমনি স্থানীয় বাজারে গত বছরের চেয়ে ধানের দামও অনেক কম।
এ বছর আউশ ধান রোপণের শুরুর দিকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুব কম ছিল। যার ফলে চারা থেকে কুশি বাড়তে পারেনি। কৃষকরা জানান, বিঘাপ্রতি গত বছরের চেয়ে তিন থেকে চার মণ ধান কম উৎপাদিত হয়েছে আপদ কালীন এই ধান।
অনেকেই জানান যে জমিতে চারা রোপণের কিছুদিন পরই রোগবালাই ও পোকার আক্রমণ হয়েছে।
আউশের ফলনে হতাশ কৃষক
কৃষকরা জানালেন, গত বছর স্থানীয় বাজারে প্রকারভেদে প্রতি মণ আউশ ধান ৯৫০ থেকে ১২০০ টাকায় কেনা-বেচা হয়েছিল। এবার প্রতি মণ আউশ ধান ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে কেনা-বেচা হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খামারবাড়ী নওগাঁর উপপরিচালক শামসুল ওয়াদুদ বলেন আউশ ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। কিছুদিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। এ কারণে রোদ কম হওয়ায় পাতার ক্লোরোফিল কম হয়েছে। কিছু এলাকার জমিতে কুশিবর্ধন এ কারণে ব্যাহত হয়। এটিও ফলন কিছুটা কম হবার কারণ।
তবে এ কর্মকর্তা দাবী করেন যে এ বছর জেলার কোথাও রোগবালাই অথবা পোকার আক্রমণ নেই। তিনি আরও জানান ব্রি-৪৮ সহ নতুন জাতের যেসব ধান রোপণ করা হয়েছিল, সেগুলোর ফলন ভালো হয়েছে।
সবকিছুর পরেও এ বছর আপদকালীন ফসল আউশ ধান উৎপাদনের লক্ষ্য ছাড়িয়ে যেতে পারে। এরকম সম্ভাবনা আছে বলে আশা করছেন এ কর্মকর্তা।