অ্যাভোকাডো। একটি বিদেশী ফল। আমাদের দেশের পেঁপের মতো গাঢ় সবুজ রঙের ফলটি দেখতে। অ্যাভোকাডো নামের এই মধ্য আমেরিকার ফল এখন দেশেই ফলছে। উচ্চমানের পুষ্টিগুণ ও উচ্চ মূল্য হওয়ায় অ্যাভোকাডো চাষে অনেকে আগ্রহী হয়েছেন ।
বিদেশি এ ফলের চারাকলম তৈরিসহ চাষ সম্প্রসারণে উদ্যোগ নিয়েছে চাঁপাইনবাববগঞ্জের হর্টিকালচার সেন্টার।
সারাবিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ফল অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডো সারা বিশ্বের শীর্ষ সারির কয়েকটি ফলের মধ্যে অন্যতম। যদিও এটি মেক্সিকো ও মধ্য আমেরিকার স্থানীয় ফল কিন্তু পুষ্টিগুণের কারণে বিশ্বব্যাপী চাহিদা রয়েছে এ ফলটির। বাংলাদেশেও বাণিজ্যিকভাবে চাহিদা থাকায় অ্যাভোকাডোর চাষ দিন দিন বাড়ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারের সহকারী উদ্যান উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত শাহীন সালেহ উদ্দীন। তার মতে, অ্যাভোকাডো খেতে খুব স্বাদের নয়, বরং পুষ্টিগুণের কারণেই অনেকে ফলটি খান। বেশ ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে এটি দেশের বড় বড় সুপারশপে।
বিদেশি ফল হওয়ায় অ্যাভোক্যাডোর একটু বাড়তি যত্ন নিতে হয়। তবে এ ফল চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাটিতে। এমনটাই জানিয়েছেন সেন্টারের অ্যাভোকাডোর মাতৃগাছটির পরিচর্যার দায়িত্ব পালনকারী উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব।
তার মতে, অ্যাভোকাডো গাছের পরিচর্যায় একটু বেশি মনোযোগী হলে ফল পাওয়া যায়।
প্রায় এক হাজার টাকা কেজি দরে অ্যাভোকাডো বিক্রি হয়ে থাকে। একটি মাঝবয়সী গাছ থেকে প্রায় শতাধিক ফল পাওয়া সম্ভব যার প্রতিটি ৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। গবেষকরা বলছেন একটি গাছ থেকে ৭০-৮০ হাজার টাকার ফল বিক্রি করা সম্ভব।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যানতত্ত্ববিদ মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ। তিনি জানান, অ্যাভোকাডো বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা ছাড়াও, ছাদবাগানে লাগানো সম্ভব। তার মতে, বাড়ির উঠানে বা ছাদে একটি বা দুইটি অ্যাভোকাডোর চারা লাগানো যায়। এতে পরিবারের চাহিদা মিটিয়েও বাড়তি আয় করা সম্ভব।
অ্যাভোকাডো চাষে আগ্রহের সাথে সাথে বেড়েছে গাছের চারার চাহিদাও বেড়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে হর্টিকালচার সেন্টারে এর চারাকলম তৈরি করা হলেও মানুষের চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত চারা তারা সরবরাহ করতে পারছে না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের অভ্যন্তরীন ফলের চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন ফল আমদানি করা হয়। তবে বর্তমানে অনেকের মধ্যেই অ্যাভোকাডোসহ বিভিন্ন ফলের বাগান তৈরিতে প্রচন্ড আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। এর ফলে অদূর ভবিষ্যতে ফল আমদানি করা নয়, বরং রপ্তানির কথা চিন্তা করবে বাংলাদেশ বলে সংশ্লিষ্টদের মত।