মৎস্য সপ্তাহ ২০২১ এ মাছ চাষে অবদানের জন্য ৩ স্বর্ণ পদক সাংসদের। রোববার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণপদক ও নগদ ৫০ হাজার টাকা ও ১২ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে রৌপ্যপদক তুলে দেয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
প্রতি বছর মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে এ ধরনের পূরস্কার দেয়া হয়। মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য নয়টি ক্ষেত্রে নয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণপদক দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ৩টি স্বর্ণপদকই উঠেছে তিনজন সংসদ সদস্যের হাতে।
এই তিন সংসদ সদস্য হলেন- ময়মনসিংহ-১১ আসনের কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ, কক্সবাজার-২ আসনের আশেক উল্লাহ রফিক এবং চট্টগ্রাম-৬ আসনের এ. বি.এম ফজলে করিম চৌধুরী।
আশেক উল্লাহ রফিক
গুণগতমানের চিংড়ির পি.এল. (গলদা/বাগদা) কাঁকড়া ক্র্যাবলেট উৎপাদন করে স্বর্ণপদক পেয়েছেন এ সংসদ সদস্য। তিনি তার হ্যাচারিতে বাৎসরিক ৬০ কোটি পি.এল. উৎপাদনের সক্ষমতার বিপরীতে মূল্যায়ন বছরে ৩৪ কোটি বাগদা চিংড়ির পি.এল. উৎপাদন করেন।
হ্যাচারিটিতে পি.এল. উৎপাদনে প্রাকৃতিক উৎসের সুস্থ, সবল ও গুণগতমানের ব্রুড চিংড়ি ব্যবহার করা হয়।
মূল্যায়ন বছরে হ্যাচারিতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উত্তম চিংড়ি চাষ অনুশীলনের মাধ্যমে ৪৯৩.৩২ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে বছর শেষে ৫৪৪ লক্ষ টাকা আয় হয়। হ্যাচারিটিতে ৪০ জন সার্বক্ষণিক জনবলসহ মোট ৫৮ জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
প্রাকৃতিক উৎসের সুস্থ, সবল ও গুণগতমানের ব্রুড চিংড়ি ব্যবহার করে মানসম্পন্ন বাগদা চিংড়ি পি.এল. উৎপাদন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় সরকার আশেক উল্লাহ রফিককে জাতীয় মৎস্য পদক-২০২১ এ স্বর্ণপদক ও নগদ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেছে।
এ. বি.এম ফজলে করিম চৌধুরী
মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনায় ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সমবায় সমিতি, গণমাধ্যম, মৎস্য সংক্রান্ত সমাজভিত্তিক সংগঠনের অবদান, প্রযুক্তি উদ্ভাবন (গবেষক/গবেষণা প্রতিষ্ঠান/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান/সংস্থা)-এর জন্য স্বর্ণপদক পেয়েছেন এ সংসদ সদস্য।
তিনি কার্প জাতীয় মাছের দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীর মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে অবদান রেখেছেন।
তিনি হালদা নদীর মাছ সংরক্ষণে ও নদীতে অপতৎরতা রোধে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় নদী সংলগ্ন এলাকায় পাহাড়া কমিটি গঠনসহ গণসচেতনতা সৃষ্টিতে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
ব্যক্তিগত উদ্যোগে হালদা নদীর মাছের ডিম আহরণ মৌসুমে ডিম সংগ্রহের জন্য আহরণকারীদের নৌকার সংস্থান করেন। স্ব উদ্যোগে হালদা নদীতে ২০১৪ সালে ৭২৬ কেজি, ২০১৫ সালে ৪৮০ কেজি এবং ২০১৮ সালে ২০০০ কেজি মাছের পোনা অবমুক্ত করেন।
কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ
মাছ, সিবাস, মিল্ক ফিস, অপ্রচলিত মৎস্য, মেরিকালচার উৎপাদন করে স্বর্ণপদক পেয়েছেন এ সংসদ সদস্য।
তিনি ২০২০ সালে ৬.৮৮ হেক্টর জলায়তন বিশিষ্ট ১০টি পুকুরে পাঙ্গাস ও কার্প মাছের মিশ্র চাষ করে মোট ৮৩৮ মে.টন মাছ উৎপাদন করেন, যার মধ্যে পাঙ্গাস ৮২৫.৬০ মে. টন এবং কার্প ১২.৪০ মে. টন।
উত্তম মাছ চাষ অনুশীলন ও খামার যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে খামারটিতে হেক্টর প্রতি ১২১.৮০ মে. টন মাছ উৎপাদন হয়।
মূল্যায়ন বছরে ৫১৭.০১ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে বছর শেষে ৬৭০.৪৮ লক্ষ টাকা আয় করেছেন এ সংসদ সদস্য। খামারটি ১৭ জন স্থায়ী জনবলসহ মোট ৮১ জন বেকার যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রেখেছে।