বাজারে বা রাস্তার পাশে অনেক সময় কদবেল বিক্রি করতে দেখা যায়, এগুলো খেতে অনেক মজাই লাগে। আমি কদবেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাই।
কদবেলের পুষ্টিমান বা উপকারিতা নিয়ে জানতে চেয়েছেন ? নিচে এ নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হলঃ
গোলগোল মিষ্টি গন্ধের কদবেলে রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। টক স্বাদের এ ফলের খাদ্যশক্তি কাঁঠাল ও পেয়ারার সমান। আমিষের পরিমাণ একটি আমের চেয়ে সাড়ে ৩ গুণ, কাঁঠালের দ্বিগুণ, লিচুর চেয়ে ৩ গুণ, আমলকী ও আনারসের চেয়ে প্রায় ৪ গুণ বেশি।
শক্ত খোলসে আবৃত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ মৌসুমী এ ফল মূলত স্বাদের জন্যই খাওয়া হয়। তবে পুষ্টিগুণ বিচারে কদবেল সত্যিই অনন্য।
আসুন জেনে নেয়া যাক কদবেল সম্পর্কে:
ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে -কদবেলের খনিজ উপাদান ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। ডায়াবেটিসের আয়ূর্বেদী চিকিৎসায় কদবেল ব্যবহার হয়।
গরম কম লাগে- কদবেল শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্নায়ুর শক্তি যোগায়। তাই কদবেল খেলে গরম কম লাগে। ত্বকের জ্বালা পোড়া কমাতে কদবেল মলম হিসাবেও ব্যবহার করা হয়।
কিডনির জন্য ভালো- কদবেল উদ্দীপক ও মূত্রবর্ধক হিসেবে ব্যবহার করা হয় আয়ূর্বেদ শাস্ত্রে। এ ফল নিয়মিত খেলে কিডনি সুরক্ষিত রাখে। প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসা বিদ্যায় কিডনি সমস্যা দূর করার জন্য সেরা প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হতো কদবেল। ফলটি যকৃত ও হৃৎপিণ্ডের জন্যও বিশেষ উপকারী।
পেপটিক আলসার ভালো হয়- কদবেল পাতার রস পানির সঙ্গে নিয়মিত পান করলে পেপটিক আলসার দ্রুত ভালো হয়। আলসারের ক্ষত সারাতে তাজা কদবেল বেশ কার্যকরী।
রূপচর্চায় কদবেল -ব্রুণ ও মেছতায় কাঁচা কদবেলের রস মুখে মাখলে বেশ দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। শ্বাসযন্ত্রের রোগে কদবেল কদবেল পাতার নির্যাস শ্বাসযন্ত্রের চিকিৎসায় কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। দুধ-চিনির সঙ্গে কদবেলে পাতা মিশিয়ে এক ধরনের খাদ্য তৈরি হয়। এই রস শিশুদের পেট ব্যথার চিকিৎসায় চমৎকার কাজ করে।
রক্ত পরিষ্কার করে কদবেল রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। বুক ধড়ফড় এবং রক্তের নিম্নচাপ রোধেও সহায়ক। গুড় বা মিছরির সঙ্গে কদবেল মিশিয়ে খেলে শরীরের শক্তি বাড়ে এবং রক্তস্বল্পতা দূর হয়।
পেট ভালো রাখে কদবেল কদবেলে রয়েছে ট্যানিন নামক উপাদান, যা দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া ও পেট ব্যথা ভালো করে। কাঁচা কদবেল ছোট এলাচ, মধু দিয়ে মাখিয়ে খেলে বদহজম দূর হয়।
প্রতি ১০০ গ্রাম কদবেলে রয়েছে প্রতি ১০০ গ্রাম কদবেলের পুষ্টিমান পানীয় অংশ ৮৫ দশমিক ৬ গ্রাম, খনিজপদার্থ ২ দশমিক ২ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৪৯ কিলো ক্যালরি, আমিষ ৩ দশমিক ৫ গ্রাম, চর্বি শূন্য দশমিক ১ গ্রাম, শর্করা ৮ দশমিক ৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫ দশমিক ৯ মিলিগ্রাম, লৌহ শূন্য দশমিক ৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-বি শূন্য দশমিক ৮০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ১৩ মিলিগ্রাম এবং প্রতি ১০০ গ্রামের শক্তি উত্পাদন ক্ষমতা ৪৯ কিলো ক্যালরি। সূত্র: ফুড ব্লগ