‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভুটানের কৃষি বিজ্ঞানীদের প্রশিক্ষণ প্রদানে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন- বিশেষ করে যেসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সক্ষমতা অর্জন করেছে।’
বুধবার (২৪ মার্চ) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিংয়ের ঢাকা সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ কথা বলেছেন।
মন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আনতে চায় বাংলাদেশ। আর ভুটানে রপ্তানি করবে ব্যান্ডউইথ। জলবিদ্যুৎ আমদানি নিয়ে দ্বিপক্ষীয় ও ত্রিপক্ষীয়ভাবে হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
ড. মোমেন বলেন, ‘ভুটানে আমরা কম মূল্যে ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করব। এছাড়া ভুটানের সঙ্গে সড়ক, আকাশ, নৌ ও রেলপথে কানেক্টিভিটি বাড়াতে উভয়পক্ষ একমত হয়েছে।’
তিনি জানান, ভুটানের শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশে ভিসার মেয়াদ এককালীন বাড়ানোর জন্য ভুটানের প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন। তার এই প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারির মধ্যেও ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর এ সফর দুই দেশের মধ্যে অসাধারণ বন্ধুত্বের পরিচয় বহন করে।’
তিনি বলেন, ‘পারস্পারিক সম্মান, রাজনৈতিক সমঝোতা ও বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে এবং উভয় দেশের জনগণের সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে অত্যন্ত চমৎকার, বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভালো প্রতিবেশীসুলভ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিদ্যমান। ২০০৯ সাল থেকে উভয় দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়, বিশেষ করে, ২০১৯ সালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর তাৎপর্যপূর্ণ বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান ঘনিষ্ট দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো গভীর হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আজ সকালে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে পরীক্ষিত বন্ধুত্বের প্রতিফলন ঘটেছে। উভয় দেশের ঐতিহাসিক ও ভালো প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় গভীর বলে উভয় প্রধানমন্ত্রী একমত হয়েছেন।’
মন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের প্রথম স্বীকৃতিদানকারী দেশ হিসেবে এবং একই ধরনের ঐতিহ্য, বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের কারণে ভুটান বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়ে বিশেষ স্থান দখল করে আছে।
তিনি জানান, উভয় নেতা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সার্বিক দিক পর্যালোচনা করেন এবং উভয় দেশের বিভিন্ন সম্ভাবনার ক্ষেত্রগুলোতে পারস্পারিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল- বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগ, জল-বিদ্যুৎ, দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, সংস্কৃতি এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি। করোনা মহামারি মোকাবিলায় ওষুধ পাঠানোয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ভুটানের প্রধানমন্ত্রী এসময় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
গত ৬ ডিসেম্বর অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ায় উভয় প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আশা প্রকাশ করেন- দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে এ চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।