Monday, 24 February, 2025

সর্বাধিক পঠিত

অসময়ে তরমুজ চাষ করে লাভবান কৃষক


তরমুজের সময় চলে গেছে মোটামুটি বেশ আগে। কিন্তু তবুও দেখা গেল যে জালের ফাঁক  তরমুজ বের হয়ে ঝুলছে। এমন অসময়ে তরমুজ চাষ করে কোন কৃষক, খুবই আশ্চর্যের বিষয় । অস্বাভাবিকভাবে সময়ে দেশে উৎপাদিত তরমুজ কিন্তু সাধারণ সময়ে উৎপাদিত তরমুজের মত নয়।  যে তরমুজ উৎপাদিত হয় স্বাভাবিকভাবে, তার ভেতরে লাল হয়। কিন্তু অসময়ের এই তরমুজের ভেতরটা হলুদ। আবার সাধারণ তরমুজের চেয়ে এটি অনেক মিষ্টি। এমন অসময়ে তরমুজ চাষ করে লাভবান হয়েছেন আবদুল মান্নান নামের এক কৃষক। জনাব আব্দুল মান্নান বরগুনা সদর উপজেলার কালীতবক গ্রামের বাসিন্দা।

বরিশাল আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষকদের উদ্ভাবিত এই পদ্ধতির নাম সর্জান পদ্ধতি।এই পদ্ধতি ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাঁদি কেটে তাতে মাছ চাষ এবং ওপরে লতাজাতীয় সবজি ও ফল আবাদ করা হয় । নিচু, পতিত জমিকে বহুমুখী ব্যবহারের লক্ষ্যে উদ্ভাবিত এই প্রযুক্তি, যা দক্ষিণাঞ্চলে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

কৃষক আবদুল মান্নান এর মতে, তাঁর দুই ছেলে আবদুল আলীম ও ছোট ছেলে বনি আমিন এই উদ্যোগের মূলে রয়েছেন । তরমুজের মৌসুমে এ এলাকায় প্রচুর ফলন হয়। বনি আমিনের মাথায় প্রথম আসে মৌসুম ছাড়া তরমুজ উৎপাদন করার আইডিয়া। এতে অনেক লাভবান হবার সম্ভাবনাও রয়েছে। বনি আমিন এই চিন্তা থেকে  ইউটিউবে এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে নিতে েএক সময় পেয়ে যান। এরপর বাবা এবং ভাইয়ের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন বনি ।

আরো পড়ুন
পাবদা (Ompok pabda) মাছের লাভজনক চাষ পদ্ধতি

পাবদা মাছ (Ompok pabda) বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং লাভজনক একটি মাছ। এটি দ্রুত বর্ধনশীল এবং চাহিদাও বেশি। সঠিকভাবে চাষ করলে Read more

বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষে সফলতা
মাশরুম

বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষ করে সফলতার নজির গড়েছেন লক্ষ্মীপুরের মো. দেলোয়ার হোসেন। প্রবাস জীবন শেষ করে বাড়ির আঙিনায় মাশরুমের খামার গড়ে Read more

পরীক্ষামূলকভাবে এবারই ৮০ শতক জমিতে  প্রথম তরমুজ আবাদ করেন তারা। বাড়ির সামনের মাছের খামারে এই ৫০০ চারা রোপণ করেন  গত এপ্রিল মাসে। এলাকার লোকজন যদিও এসব দেখে হাসি তামাশা করেন। কিন্তু তাঁদের যত্নে চারাগুলো একসময় বেড়ে ওঠে।

পুকুরের চারপাশে খুঁটি পুঁতে জাল দিয়ে লতাগুলো জালের ওপর তুলে দেন। সেখানে সেগুলো তরতর করে বাড়তে থাকে। এরপর আসে ফুল তারপর ফুল থেকে আসে ফল। কচি সবুজ–কালো ফলগুলো দেখে পাগলামি আখ্যা দেয়া লোকগুলোও প্রতিদিন অসময়ে তরমুজ এর ফলন বিস্ময়ভরে দেখতে থাকেন।

আলীম জানান যে ৫০০ গাছে দেড় হাজার তরমুজ পেয়েছেন তারা। এদের ওজন চার থেকে সাত কেজি।

আলীম জানান অসময়ে তরমুজ আবাদ এর কথা শুনেই তিনি কাজে নেমে পড়েন।স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে পরামর্শ করে কাজটা  শুরু করেন। লোকজনের বিদ্রুপ তার মনে একধরনের জেদ চাপিয়ে দেয়। সেই জেদ এর ফসল হিসেবে তাদের সফলতা আসে।

তার হিসেবে আবাদ করতে শ্রম ছাড়া ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা করে বিক্রি করছেন তারা বাড়ি থেকেই।

বরগুনা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, এই পদ্ধতি ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হলে  সারা বছর তরমুজ  পাবার পাশাপাশি চাষিরা লাভবান হবেন।

0 comments on “অসময়ে তরমুজ চাষ করে লাভবান কৃষক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আর্কাইভ