
ভালো ফলনের পরও লাভের মুখ দেখছেন না বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার মরিচ চাষিরা। চলতি মৌসুমে উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেক কম দামে মরিচ বিক্রি করতে বাধ্য হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।
চাষিদের হতাশ করছে ১৫ টাকার কেজি
উপজেলার তেঁতুলিয়া, কোমারপুর, মঙ্গলপুর, জিনইর, কাশিমালা, শিবপুর, কড়ই, সালগ্রাম, আমইল, কেশরতাগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় বর্ষা মৌসুমে প্রায় ৭০০ বিঘা জমিতে মরিচের চাষ হয়েছে। গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এবার মরিচ চাষের পরিমাণ অনেকটাই বাড়িয়েছিলেন চাষিরা। কিন্তু বর্তমানে হাটে-বাজারে প্রতি কেজি মরিচ মাত্র ১৫ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে, যেখানে চাষিদের গড় উৎপাদন খরচ প্রতি কেজি ২৫ টাকার মতো। এতে করে লোকসানের বোঝায় দিশেহারা তারা।
তেঁতুলিয়া গ্রামের মরিচ চাষি এনামুল ও জিল্লুর রহমান জানান, এক বিঘা জমিতে মরিচ চাষে জমি তৈরি, চারা রোপণ, সার, কীটনাশক প্রয়োগ, পরিচর্যা এবং শ্রমিকের মজুরি বাবদ প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। বর্তমান বাজারদরে এই খরচ ওঠানোও সম্ভব হচ্ছে না বলে তারা হতাশা ব্যক্ত করেন।
সরবরাহ বেশি, পাইকার কম: দায় কার?
আদমদীঘির মরিচ ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। কাঁচামরিচ পাইকারি ব্যবসায়ী সোহেল ও ফারুক হোসেন জানান, প্রতি হাটবারে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় আড়াই হাজার মণ কাঁচামরিচ সরবরাহ করা হয়। তাদের মতে, বাজারে কাঁচামরিচের সরবরাহ বেশি এবং পাইকার কম থাকায় দাম কমে গেছে। তবে তারা আশা করছেন, পরবর্তীতে মরিচের দাম বাড়তে পারে।
তবে, চাষিদের প্রশ্ন, এই লোকসানের বোঝা আর কতদিন তাদের বইতে হবে? সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে দ্রুত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া না হলে আগামীতে মরিচ চাষে আগ্রহ হারাতে পারেন অনেক কৃষক।