কৃষি বিভাগ, কৃষক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অন্য বছরের তুলনায় এবছর টানা বৃষ্টির দেখা মেলেনি বলে হাওরে পানি কম হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে এই সময়ে যে জমিতে পানি থাকত সেখানে এবার পানি কম। কাউয়াদিঘি হাওরে সেচ দেওয়ার পরও পানি বাড়াতে পারেনি চাষিরা। তা্ই পানি কম থাকার সুযোগটা ভালভাবে কাজে লাগিয়েছেন কৃষকেরা। অতীতে এসব জমিতে শুধু বোরো ধানের ওপরই নির্ভর করে থাকতেন কৃষকেরা।
কাউয়াদিঘি হাওরের মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আখাইলকুরা, একাটুনা ইউনিয়নের হাওরাঞ্চল এবং রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও, উত্তরভাগ ইউনিয়নের হাওরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, পানি কম থাকায় কৃষকেরা এরই মধ্যে বেশির ভাগ জমিতে আমনের চারা রোপণ করে ফেলেছেন। তবে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে হাওরে পানি কিছুটা বেড়েছে। এতে হাওরের নিচের দিকে পানি কম দেখে যাঁরা বীজতলা তৈরি করেছিলেন, সেসব স্থানের কিছু বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। সেখানে পানি না কমা পর্যন্ত অবশ্য কৃষকদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
কৃষি বিভাগ ও পাউবো সূত্রে জানা যায়, কাউয়াদিঘি হাওর বিস্তৃত মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলা নিয়ে। হাওরের বেশির ভাগ পড়েছে রাজনগর অংশে। শুকনা মৌসুমে বোরোতে সেচ প্রদান ও বর্ষায় হাওরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৯৮৩ সালে স্থাপিত কাশিমপুর পাম্প হাউস দীর্ঘদিন ব্যবহৃত হবার কারণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছিল না। যার ফলে ১৫-২০ বছর ধরে হাওরাঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এই জলাবদ্ধতার কারণে হাওরাঞ্চলে আমন চাষ প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। বোরো ফসলও কৃষক ঘরে তুলতে পারতেন না নিয়মিত।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক জানান, এবার টানা বৃষ্টি না হবার কারণে হাওরে পানি কম জমেছে। কাউয়াদিঘি হাওরে সেচও চালু থাকায় হাওরাঞ্চলে আমনের আবাদ বেড়ে গেছে। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের সাথে সাথে কৃষকেরা মানিয়ে নিয়েছেন।তার মতে সামনে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাত হলে কিছু ধান তলিয়ে নষ্ট হলেও আবার রোপণ করা যাবে।