Saturday, 20 April, 2024

সর্বাধিক পঠিত

লেয়ার মুরগির পালন এবং অর্থনৈতিক ভাবে সফলতা


Layer hen rearing and economical benefit

আমাদের প্রাণীজ আমিষ খাতের অন্যতম একটি স্থান দখল করে রয়েছে পোল্ট্রি। আর তাই এ খাতের উন্নয়ের জন্য দরকার নিয়মতান্ত্রিক ভাবে প্রতিপালন ও দেখাশোনা করা। আজ কথা বলবো পোল্ট্রি পালন ব্যবস্থা ও তাদের সুবিধা নিয়ে। তো চলুন দেখে নেয়া যাক লেয়ার মুরগির পালন এবং অর্থনৈতিক ভাবে সফলতা।

একটি অর্থনৈতিক ভাবে সফল ফার্ম গড়ে তুলতে মূলত সঠিক পালন ব্যবস্থা অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ। এই ব্যবস্থার মধ্যে সঠিক জাত নির্ধারণ,রোগ নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য সরবরাহ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।

নিম্নোক্ত পদ্ধতিতে সাধারণত আমাদের দেশে পোল্ট্রি পালন করা হয়ে থাকে-

আরো পড়ুন
বাংলাদেশে কেন বাড়ছে না ভেনামি চিংড়ির বানিজ্যিক চাষ

বাগদা চিংড়ির (ব্ল্যাক টাইগার) চেয়ে ভেনামির উৎপাদন খরচ প্রায় অর্ধেক। তারপরও বাংলাদেশে কেন বাড়ছে না ভেনামি চিংড়ির বানিজ্যিক চাষ ? Read more

তেলাপিয়ার দ্রুত বৃদ্ধির জাত উন্মোচন- ১ কেজি হবে ৪ মাসে

তেলাপিয়ার দ্রুত বৃদ্ধির জাত উন্মোচন করছেন জেনোমার জেনেটিক্স। এই নতুন জাতের তেলাপিয়া লাইনটি দ্রুত বৃদ্ধির জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। জেনোমার Read more

১.  মুরগির সনাতন পালন পদ্ধতি (Scavenging system ) :

এই পদ্ধতি সবচেয়ে পুরাতন। এ পদ্ধতিতে সাধারণত পোল্ট্রি ছেড়ে দিয়ে পালন করা হয়। খাবার তারা নিজেরাই সংগ্রহ করে খাই অথবা কিছু ক্ষেত্রে supplementary  খাবার দেয়া হয়। কেবলমাত্র রাতে থাকার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা থাকে।

সনাতন পালন পদ্ধতির সুবিধাসমূহ –

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি হয়ে থাকে।

প্রতিপালন খরচ অনেক কম

ভ্যাক্সিনেশন ও মেডিকেশন খরচ কম হয়ে থাকে।

সনাতন পালন পদ্ধতির অসুবিধাসমূহ –

কেবলমাত্র লোকাল ব্রিড এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

এ পদ্ধতিতে হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে কেননা, সবসময় পোল্ট্রি ছাড়া অবস্থায় পালন করা হয়।

বড় মাত্রার শিল্পের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি কার্যকর নয়।

লেয়ার মুরগির পালন
Natural breeding of hens

২. মুরগির আধা সনাতন পালন পদ্ধতি (Semi scavenging system )

এই পদ্ধতিতে সাধারণত দুভাবেই পালন করা হয়। একটি নির্দিষ্ট এরিয়াতে আবদ্ধ করে এবং সেখানে কিছুটা বিচরণের জায়গা রেখে। খাবার সরবরাহের ক্ষেত্রে ফিড প্রদান এবং পোল্ট্রি নিজেই সংগ্রহ করে খেয়ে থাকে। এভাবে ক্রস ব্রিড পালন করা হয়ে থাকে।

আধা সনাতন পদ্ধতির সুবিধাসমূহ –

প্রোডাকশন scavenging system  এর চেয়ে বেশি হয়ে থাকে।
খুব সহজেই দেখাশোনা করা যায়।

আধা সনাতন পদ্ধতির অসুবিধাসমূহ-

টোটাল উৎপাদন খরচ অনেক বেশি হয়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হয় scavenging system এ পালন করার চেয়ে।

৩. মুরগির নিবিড় পালন পদ্ধতি (Intensive system)

বর্তমানে এ পদ্ধতিতেই সবচেয়ে বেশি পোল্ট্রি পালন করা হয়।

এখানে নির্দিষ্ট জায়গায় আবদ্ধ করে পালন করা হয় এবং খাবার পুরোটা সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

High yielding pure breed, indigenous bird, Varieties and strains এ পদ্ধতিতে পালন করা হয়।

নিবিড় পালন পদ্ধতির সুবিধাসমূহ-

অনেক সংখ্যক একসাথে পালন করা যায়।
ডিম সংগ্রহ করা সহজ।
সুষম খাবার প্রদান করা যায়।
লেবার খরচ কম হয়।
জাত উন্নয়ন করার সুযোগ থাকে।

নিবিড় পালন পদ্ধতির অসুবিধাসমূহ-

প্রোডাকশন খরচ অনেক বেশি হয়।
ভ্যাক্সিনেশন, খাবার এবং মেডিকেশন খরচ বেড়ে যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।

লেয়ার মুরগির পালন পদ্ধতি-

লেয়ার মুরগি বলতে ডিম উৎপাদনের জন্য বিশেষ ধরনের মুরগি যাদেরকে একদিন বয়স থেকে পালন করা হয়, যারা ১৮ থেকে ১৯ সপ্তাহ বয়সে ডিম দিতে শুরু করে এবং সাধারণত ৭২ থেকে ৭৮ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে।

লেয়ার মুরগির জাত-

ডিমের রং অনুযায়ী লেয়ার মুরগি দুই ধরনের:

সাদা ডিম উৎপাদনকারী:
এরা আকারে ছোট,ডিমের খোসার রং সাদা। যেমন: লোহম্যান হোয়াইট,হাবার্ড হোয়াইট, হাই সেক্স হোয়াইট, শেভার হোয়াইট, হাইলাইন হোয়াইট, বোভান্স হোয়াইট।

বাদামী ডিম উৎপাদনকারী:

এরা আকারে বড়,ডিমের আকার বড়, ডিমের খোসার রং বাদামী। যেমন: হাই সেক্স ব্রাউন, শেভার ৫৭৯, লোহম্যান ব্রাউন, হাই লাইন ব্রাউন,গোল্ড লাইন, ব্যবলোনা টেট্রা, ব্যবালোনা হারকো, হাবার্ড ব্রাউন।

লেয়ার মুরগির পালন
Egg laying hens

লেয়ার মুরগির বাসস্থান ব্যবস্থাপনাঃ

মুরগি পালন পদ্ধতির উপর নির্ভর করে ঘর তৈরী করা হয়। তিন পদ্ধতিতে মুরগি পালন হয়। যথাঃ

  • লিটার বা বিছানা পদ্ধতি
  • মাঁচা পদ্ধতি
  • খাঁচা পদ্ধতি

লিটার বা বিছানা পদ্ধতিতে মুরগি পালনঃ

এই পদ্ধতিতে ঘরের মেঝের উপর বিছানা হিসেবে বিভিন্ন ধরনের দ্রব্য ব্যবহার করে মুরগি পালন করা হয়। লিটারের সহজলভ্যতা ও দামের উপর নির্ভর করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রকম দ্রব্য লিটার হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

লিটারের গুণাগুণঃ
লিটার ওজনে হালকা, দ্রুত পানি শোষন ক্ষমতা, নরম ও আরামদায়ক, সুলভ ও সহজলভ্য, কম তাপ পরিবহন ক্ষমতা ইত্যাদি গুণাগুণ যুক্ত হতে হবে।

লিটার হিসাবে ব্যবহৃত দ্রব্যাদিঃ
১. তুষ
২. করাতের কাটা কাঠের গুড়া
৩. বালি
৪. ছাই
৫. আখের ছোবড়া
৬. খড়ের ছোট টুকরা ইত্যাদি।

ভাল লিটার দ্রব্যের বৈশিষ্ট্যঃ

  • আরামপ্রদ।
  • অধিক পানি শোষন ক্ষমতা সম্পন্ন।
  • আর্দ্র হওয়া চলবে না।
  • শুষ্ক ও ঝরঝরে হবে তবে ধুলি হবে না।
  • সহজলভ্য ও সস্তা।
  • ছত্রাক ও পরজীবি মুক্ত।
  • লিটার হিসাবে ব্যবহারের পর সার হিসাবে ব্যবহার করা যায় এমন।

মুরগির লিটার ব্যবস্থাপনাঃ

  • মুরগির ঘরে মুরগি রাখার ১ সপ্তাহ পূর্বে লিটার দ্রব্য সরবরাহ করতে হবে।
  • লিটার এর পুরুত্ব ১.৫-২ ইঞ্চি হবে
  • মুরগির লিটার যাতে মলমুত্রাদি অথবা খাবার পানির মাধ্যমে ভিজে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
  • লিটার প্রতি সপ্তাহে আঁচড়া দিয়ে আগলা করে নিতে হবে।
  • কেক হলে ভেঙ্গে দিতে হবে।
  • প্রয়োজনে পুরাতন লিটারের উপর পাতলা করে নতুন লিটার যোগ করা যেতে পারে।
  • লিটারের আর্দ্রতা যেন ২০-২৫ ভাগ এর মধ্যে হয়, লিটার মাঝে মাঝে উল্টে পাল্টে অর্থাৎ উপরের লিটার নীচে এবং
  • নীচের লিটার উপরে দিতে হবে।
  • আর্দ্রতা কম থাকলে পানি স্প্রে করতে হবে।
  • আর্দ্রতা বেশি থাকলে লিটারের সাথে কিছু সুপার ফসফেট বা চুন এবং কিছু শুকনো লিটার মিশাতে হবে।

খাঁচা পদ্ধতিতে মুরগি পালনঃ

বর্তমানে আধুনিক বিশ্বে খাঁচা পদ্ধতিতে অধিক দক্ষভাবে ডিম পাড়া মুরগি পালন করা হচ্ছে। বিভিন্ন টাইপের খাঁচা বাজারে পাওয়া যায়। খাঁচা সাধারণত পিরামিড টাইপ বা ব্যাটারী হয়ে থাকে।

১৮ইঞ্চি×১২ইঞ্চি×১৮ইঞ্চি (দৈর্ঘ্য×প্রস্থ×উচ্চতা) বিশিষ্ট একটি খোপে অনায়াসে ৩টি ডিমপাড়া মুরগি রাখা যায়।

খাঁচা পদ্ধতিতে খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ

    • ডিম উৎপাদন শুরু হওয়ার ২ সপ্তাহ আগে থেকে খাদ্যের শতকরা ২ ভাগ ক্যালসিয়াম সরবরাহ করা উচিত।
    • সর্বাধিক ৮ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত স্টার্টার রেশন প্রদান করা যায়।
    • পরবর্তীতে ১৮ সপ্তাহ পর্যন্ত ২ ধাপ বা ৩ ধাপে খাদ্য দিতে হবে।
    • ডিম উৎপাদন শুরুর পর ৪ থেকে ৫ দিন পর্যন্ত দ্রুত খাওয়ার পরিমাণ বাড়তে থাকে এজন্য বয়সের পরিবর্তে ওজন অনুসারে খাদ্য প্রদান।

খাঁচা পদ্ধতিতে পালন ব্যবস্থাপনাঃ

All in-All out পদ্ধতি:

খামারে এক ব্যাচ বাচ্চা পালন করে ডিম উৎপাদন শুরু পর্যন্ত আর কোন বয়সের বাচ্চা পালন করা হয় না। প্রতি ব্যাচ বাচ্চা পালনের পর পরবর্তী ব্যাচ বাচ্চা পালনের পূর্বে হাতে অনেক সময় থাকে।

সুবিধা
১। ঘর পরিষ্কার, জীবাণুমুক্ত ও সংস্কার করা যায়;

২। খামারে একই সাথে বিভিন্ন বয়সের বাচ্চা না থাকায় পরষ্পরের মধ্যে রোগ বিস্তারের সম্ভাবনা থাকে না।

অসুবিধা
১। ডিম উৎপাদনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যায় না;

২। স্থানের অপচয় হয়।

Multiple rearing পদ্ধতি:

খামারে একই সাথে বিভিন্ন শেডে বিভিন্ন বয়সের মুরগি পালন করা হয়। যেমন-
১) ব্রুডার শেডে বাচ্চা

২) গ্রোয়ার শেডে বাড়ন্ত বাচ্চা ও পুলেট

৩) লেয়ার শেডে ডিম পাড়া মুরগি

সুবিধা 

1. খামার সম্প্রসারণ ও ডিম উৎপাদনের ধারাবহিকতা বজায় থাকে:
2. বিভিন্ন বয়সের মুরগি পালন করা যায়।

অসুবিধা

1. বিভিন্ন বয়সের মুরগি থাকায় রোগ বিস্তারের সম্ভাবনা বেশি থাকে;
2. প্রতি ব্যাচ মুরগি পালন শেষে শেড সম্পূর্ণরুপে জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব হয় না।

Isolation rearing পদ্ধতি:

ব্রুডারে বাচ্চা প্রতিপালনের পর স্বতন্ত্র গ্রোয়ার শেডে স্হানান্তর করা হয়।

সুবিধা
1. রোগ-জীবাণুর বিস্তার কম হয়;
2. স্বতন্ত্র ব্রুডার ঘর ব্যবহারের ফলে কম খরচে বাচ্চা ব্রুডিং করা যায়।
অসুবিধা
রোগ বিস্তারের সম্ভাবনা কম থাকলেও বাচ্চা স্হানান্তরের সময় কিছুটা ধকল সৃষ্টি হয়।

Seasonal rearing পদ্ধতি:

সিজন বা মৌসুমের উপর নির্ভর করে বাচ্চা পালন করা হয়। সাধারণত: ৮ সপ্তাহ বয়স থেকে ১৮ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত পুলেটের ঘরে ১২ থেকে ১৩ ঘন্টা আলো প্রয়োজন।

সুবিধা

1. সিজনাল বা মৌসুমী বাচ্চা অনেক বেশী উৎপাদনশীল থাকে;

2. প্রাকৃতিক আলোর সাহায্যে বাচ্চা উৎপাদন করা হয় বলে উৎপাদন খরচ কম হয়।

অসুবিধা

1. বছরে পুলেট উৎপাদন মাত্র একবার করা যায়।

লেয়ার মুরগির পালন এ টিকা প্রদানঃ

টিকা প্রদান কর্মসূচি অনুসারে বিভিন্ন রোগের টিকা দেয়া হলে

শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি সৃষ্টি হয় এবং সংক্রামক রোগ হতে মুরগিকে রক্ষা করা যায়।

টিকাদান ফলপ্রসূ হলে রোগের প্রাদুর্ভাব খুব কম হবে এবং মৃত্যুর হার সহনীয় পর্যায় রাখা যাবে।

লেয়ার মুরগির টিকা:

মারেক্স, রাণীক্ষেত, গামবোরো, ব্রংকাইটিস, বসন্ত, সালমোনেলা, করাইজা ইত্যাদি।

টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা-

  • মুরগি ধরার সময় যত্ন সহকারে ধরতে হবে
  • মুরগির যে কোন ধরনের ধকল মুক্ত অবস্হায় টিকা প্রয়োগ করতে হবে।
  • অসুস্হ মুরগিকে টিকা দেয়া যাবে না।
  • টিকা প্রদান উপকরণ ফুটন্ত পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে।
  • আবহাওয়া যখন ঠান্ডা সেসময়ে টিকা প্রদান করতে হবে।

টিকা ব্যবহারের সাধারণ নিয়ম:

প্রতিষেধক টিকা সবসময়ই সুস্থ পাখিকে প্রয়োগ করতে হয়

লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন বৃদ্ধির উপায়:

১। বাণিজ্যিক মুরগির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাদ্য সরবরাহ করতে হবে
২। সঠিক খাদ্য ও পানি ব্যবস্থাপনা।
৩। যথাযথভাবে লিটার পরিচর্যা।
৪। মুরগিকে কৃমি মুক্ত রাখতে হবে।
৫। অধিক তাপমাত্রা হতে মুরগিকে রক্ষা করতে হবে
৬। ষ্ট্রেইন অনুসারে ডিম পাড়ার বয়সে নির্ধারিত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৭। ঘরে পরিমাণমত আলো প্রদান।
৮। ঘরে যথেষ্ট পরিমাণ বিশুদ্ধ বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ।
৯। সকল প্রকার ধকল পরিহার।

খামারের বায়োসিকিউরিটি নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ নিতে হবেঃ

১। বাইরে থেকে যাতে কোন জীবাণু শেডে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য খামারকে বহিরাগত মানুষ, কীটপতঙ্গ, বন্য পাখি, গাড়ি, ইদুঁর ইত্যাদি থেকে মুক্ত রাখতে হবে।
২। খামারের প্রবেশ পথে ও শেডের দরজার সম্মুখে সব সময় একটি বড় পাত্রে বা ফুটবাথে জীবাণুনাশক ঔষধের
মিশ্রিত পানি রাখতে হবে।
৩। নিয়মিত খামারের কাজে নিয়োজিত সকলে শেডে প্রবেশের  সময় পা ডুবিয়ে জুতা বা স্যান্ডেল জীবাণুমুক্ত করতে হবে।শেডের ভিতর জীবাণু, জীবাণুনাশক দিয়ে ধ্বংস করতে হবে।
৪। খামারে বিভিন্ন বয়সের মুরগি না রাখা উচিত।
৫। সব সময় ‘‘অল ইন অল আউট’’ পদ্ধতি মেনে চলতে হবে।
৬। একটি ফার্মে একই বয়সের একই ষ্ট্রেইনের  বাচ্চা পালন সবচাইতে ভাল।
৭। সময়মত টিকাদান কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
৮। খামারের সব যন্ত্রপাতি জীবাণুনাশক ঔষধ দিয়ে ধৌতকরণ এবং ফিউমিগেশনের মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।
৯। মৃত মুরগি এবং মুরগির বর্জ্য পদার্থ খামার থেকে দূরে মাটিতে গর্ত করে মাটির গভীরে পুঁতে ফেলতে হবে।
১০। জীবাণুমুক্তকরণের জন্য বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য ও ফিউমিগেশন প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়।
১১। রাসায়নিক দ্রব্যাদির জন্য ক্লোরিন, আয়োডিন, কষ্টিক সোডা, লাইম ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
১২।  ফিউমিগেশনের জন্য ১ ভাগ পটাশিয়াম-পার-ম্যঙ্গানেটের সাথে ২ ভাগ ফরমালিন মিশালে ফলমালডিহাইড গ্যাস ও ধোঁয়ার সৃষ্টি হয় এবং জীবাণু ধ্বংস হয়।

লেয়ার মুরগির লাইটিং সিডিউলঃ

লেয়ার মুরগির বয়স (সপ্তাহ)- প্রয়োজনীয় আলোক ঘন্টা
১ সপ্তাহ ➡২৩ ঘন্টা
২ সপ্তাহ ➡২২ ঘন্টা
৩ সপ্তাহ ➡২১ ঘন্টা
৪ সপ্তাহ ➡২০ ঘন্টা
৫ সপ্তাহ ➡১৯ ঘন্ট
৬ সপ্তাহ ➡১৮ ঘন্টা
৭ সপ্তাহ ➡১৭ ঘন্টা
৮ সপ্তাহ ➡১৬ ঘন্টা
৯ সপ্তাহ ➡১৫ ঘন্টা
১০ সপ্তাহ  ➡১৪ ঘন্টা
১১ সপ্তাহ ➡ ১৩ ঘন্টা
১২ সপ্তাহ  ➡১২ ঘন্টা
(১৩ সপ্তাহ থেকে ১৮ সপ্তাহ পর্যন্ত)➡ শুধু দিনের আলো
১৯ সপ্তাহ  ➡১৩ ঘন্টা
২০ সপ্তাহ  ➡১৩ ঘন্টা
২১ সপ্তাহ ➡ ১৪ ঘন্টা
২২ সপ্তাহ  ➡১৪ ঘন্টা
২৩ সপ্তাহ  ➡১৫ ঘন্টা
২৪ সপ্তাহ  ➡১৬ ঘন্টা
২৪ সপ্তাহের বেশি বয়স এর জন্য ➡১৬ ঘন্টা

লেয়ার মুরগি (বাণিজ্যিক) ভাবে টিকার শিডিউল নিম্নরুপ

দিন                           টিকা

১ম দিন             মারেক্স* (লাইভ ইঞ্জেকশন)
৩-৫ম দিন          আই বি +এন ডি*
৬-৮ তমদিন          এন ডি + আই বি ডি(কিল্ড)
১০-১২তম দিন        আই বি ডি*
১৩তম দিন           মারেক্স (লাইভ)
১৭-১৯তম দিন        আই বি ডি*
২৫-২৭তম দিন       এন ডি + আইবি*
২৮-৩৫ তম দিন      পক্স (বসন্ত)
৪২-৪৫ তমদিন         করাইজা(কিল্ড)
৪৯-৫০ তম দিন        টাইফয়েড  (লাইভ,কিল্ড)
৫২-৫৫তম দিন         কলেরা (কিল্ড)
৬০-৬৫তম দিন         আই বি ডি+ এন ডি *
৭০-৭৫তম দিন         পক্স
৭৭-৮০তম দিন         করাইজা(কিল্ড)
৯০-৯৫তম দিন         কলেরা (কিল্ড)
১০০তম দিন           টাইফয়েড
১৫-১৬ সপ্তাহ           আই বি ডি+এন ডি +ই ডি এস(কিল্ড)* (সাথে এন ডি লাইভ)

*টিকাগুলো অবশ্যই দিতে হবে।

One comment on “লেয়ার মুরগির পালন এবং অর্থনৈতিক ভাবে সফলতা

Md. Gausur Rahman

Very much informative for all. Thanks to author for such an informative and enriched article.

Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *