সেচ দিবেন কিন্তু বিদ্যুৎ বা তেল ব্যবহার করবেন না তা কি হয়! কিন্তু এমন অসম্ভব কাজই একজন কৃষক করে দেখিয়েছেন। বিদ্যুৎ-তেলবিহীন সেচযন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন এক কৃষক। ভোলার লালমোহনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পেশকার হাওলা গ্রামের বাসিন্দা মো. অলিউল্যাহ। স্থানীয় একটি খালে তার উদ্ভাবিত সেচযন্ত্রটি বসিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে পানি উত্তোলন শুরু করেছেন। এক মাস ধরে বিষয়টি জানতে পেরে অনেকেই আসছেন এ যন্ত্র দিয়ে পানি উত্তোলনের বিষয়টি দেখতে।
প্রস্তুত প্রণালী ও কার্যপ্রণালী
অলিউল্যাহ তার ভাষায় জানান যে, প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ করেছেন তিনি এটা তৈরি করতে। লোহার অ্যাঙ্গেল, প্লেন শিট ও প্লাস্টিক পাইপ দিয়ে তিনি এটি বানিয়েছেন। এই সেচ যন্ত্রটিতে আছে আটটি পাখা। এই পাখাটি পানির স্রোতের সঙ্গে ঘুরতে থাকে।
প্রতিটি পাখার ওপরের অংশে ইউপিভিসি ক্লাস ডি পাইপ লাগানো রয়েছে। প্রতিটি পাইপের ভেতরে লাগানো আছে কয়েল পাইপ। এই কয়েল পাইপ লাগিয়ে সেটা একটি কনটেইনারে খুব সুন্দর ভাবে সন্নিবেশন করা হয়েছে।
পাখাগুলো জোয়ারের প্রভাবে ঘুরতে থাকে। এভাবে এই পাখাগুলো যখন ঘুরতে থাকে, তখন পাইপের সম্পূর্ণ পানি ভর্তি হয়ে যায়। এই পানিই আবার কয়েল পাইপের মাধ্যমে কনটেইনারে পৌছে যায়।
এই কনটেইনারে জমা হওয়া পানি আরেকটি পাইপের মাধ্যমে জমিতে গিয়ে পড়ে।
অলিউল্যাহ জানান, প্রাথমিক ভাবে যন্ত্রটি জোয়ারের স্রোতের ওপর নির্ভর করে তৈরি করা হয়েছে। তার মতে যদি একে আরও আধুনিকায়ন করা সম্ভব হলে জোয়ার-ভাটা উভয় সময়ই পানি তোলা সম্ভব হবে। আর উভয় সময় পানি তোলা সম্ভব হলে দরিদ্র কৃষকদের এটি অনেক উপকারে আসবে বলেই তিনি মনে করেন।
স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, বৈদ্যুতিক মোটর বা ইঞ্জিনচালিত সেচযন্ত্র দিয়ে সেচ দেন তারা। এতে তাদের অনেক খরচ হয়। সেক্ষেত্রে অলিউল্যাহর সেচযন্ত্র দিয়ে সেচ দিতে পারলে খরচ একেবারেই কমে যাবে।
অলিউল্যাহ বলেন, এ যন্ত্র দিয়ে খরচ কমে যাবে। খরচ ছয় ভাগের এক ভাগ হয়ে যাবে েএবং একই সাথে এটি পরিবেশ বান্ধব। এই যন্ত্রের কার্যক্ষমতা নির্ভর করে খালের স্রোতের উপর। স্রোত যত বেশি থাকবে, পানি সেচ দেয়া যাবে তত বেশি।
লালমোহন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, সংশ্লিষ্টদের কাছে সেচযন্ত্রটির কার্যকারিতা ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য জানানো হয়েছে।