Thursday, 25 April, 2024

সর্বাধিক পঠিত

খাটি মধু জমতে পারে কি! বিশেষজ্ঞদের কী মত?


খাটি মধু জমতে পারে কি!

বাজার থেকে একবার একজন গ্রাহক বোতলজাত মধু কিনে আনলেন। কিন্তু কিছুদিন পর দেখলেন তার মধু জমতে শুরু করেছে। এতে তো মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে গ্রাহকের। তার ধারণা হয়মধুতে নিশ্চয়ই ভেজাল আছে। কিন্তু সত্যিই কি তাই! খাটি মধু জমতে পারে কি না তা নিয়ে অনেকের মনেই আছে প্রশ্ন। তবে গবেষকরা কিন্তু বলছেন খাটি মধু জমতে পারে, এটি দিয়ে ভেজাল পরিমাপ সঠিকতা নিরূপন হয় না।

চট্টগ্রামভিত্তিক মধু গবেষক ও মধু জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ মঈনুল আনোয়ার ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে মধু নিয়ে গবেষণা করছেন। খাটি মধু জমতে পারে কি না এ প্রশ্নটির সরাসরি উত্তর তিনি দেননি। বরং তিনি ইমেইলে দেশ-বিদেশের কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতামত পাঠান এই গবেষক।

আরো পড়ুন
কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রজনন রক্ষার্থে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ

কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির উন্মুক্ত স্থান। প্রজনন ক্ষেত্র বাচানোর জন্য রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে ২৫ এপ্রিল থেকে Read more

বোরো মৌসুমের ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ

এবারের ২০২৪ সালের বোরো মৌসুমের ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। আজ রবিবার মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও Read more

পৃথিবীর সকল ধরণের মধু জমতে পারে

এ বিষয়ে রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মৌ বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন এর সাথে কথা হয়।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে প্রায় সব ধরণের মধুতে জমে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে।
কয়েকটি খুব দ্রুত জমে তো তাদের কয়েকটি জমতে সময় নেয়।
মূলত মধুতে বিদ্যমান আর্দ্রতা, তাপমাত্রা এবং উৎসের ওপর নির্ভর করে মধু জমবে কি না।
তাছাড়াও মধুতে বিদ্যমান গ্লুকোজের পরিমাণের ওপরও এটি নির্ভর করে।

জমে যাওয়া মধু কি নিরাপদ

জমে যাওয়া মধু নিরাপদ কি না, সে বিষয়েও ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন অভয় দেন।

মধুর জমে যাওয়াকে একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সেকারণেই জমে যাওয়া মধুকে সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং এতে সব ধরনের গুণগত মান অটুট থাকে বলে তিনি উল্লেখ করে থাকেন।

তবে জমে যাওয়া মধুর বেলায় তিনি সমাধানের কথাও বলেন।

কোনো কারণে মধু জমে গেলে তা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১৫ মিনিট রেখে দিতে হবে।

এতে সেটি আবার আগের তরল অবস্থায় বা লিকুইড ফরমে চলে আসবে।

গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আহসানুল হক স্বপন।

মধু জমে যাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, প্রধানত চার ধরনের সুগার ফ্রুকটোজ, গ্লুকোজ, সুক্রোজ ও ম্যালটোজ নামের এই চার ধরণের সুগার থাকে মধুতে।

সরিষার মধুতে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজের অনুপাত প্রায় সমান হবার কারণে জমে যাবার প্রবণতা দেখা যায় বেশি।

গ্লুকোজ ফ্রুকটোজের চেয়ে খুব কম দ্রবণীয়।

অন্যদিকে পাকা সরিষার মধুতে পানির পরিমাণ থাকে কম থাকে।

সাধারণত শীতকালে সরিষার মধু সংগ্রহ করার কারণে এর তাপমাত্রাও থাকে কম।

পাকা সরিষার খাঁটি মধু এসব কারণে জমে যায় যা খুবই স্বাভাবিক ও ভালো সরিষার মধু নির্দেশ করে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘বেয়ার হানি’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ডাস্টিন ভ্যানেস।

তিনি বলেন, মধুর ক্রিস্টালাইজেশন বা স্ফটিকায়ন হওয়া একটি প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

কিন্তু এতে এটা প্রমাণিত হয় না যে মধুতে ভেজাল মেশানো হয়েছে।

বিভিন্ন ধরনের মধুতে থাকা খনিজ উপাদান থাকায় মধু ভিন্ন ভিন্ন অনুপাতে জমে যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, প্রায়ই দেখা যায়, কালো বর্ণের মধু হালকা বর্ণের মধুর চেয়ে দেরিতে জমাট বাঁধে।

‘সুপার স্যাচুরেটেড দ্রবণ’ নামের একটি প্রক্রিয়া কারণে এ জমাট বাঁধে।

0 comments on “খাটি মধু জমতে পারে কি! বিশেষজ্ঞদের কী মত?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *