লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা সহিষ্ণু ধানের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো এই উদ্ভাবন হয়েছেন। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বিজ্ঞানীরা এ উদ্ভাবন সম্ভব করেছেন। যার ফলে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে বাংলাদেশের ধান গবেষণায়। লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা সহিষ্ণু ধানের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন এর খবর জানানো হয় আজ।
আজ বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহে অবস্থিত বিনায় এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সেই সংবাদ সম্মেলনেই লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা সহিষ্ণু ধানের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন তথ্য জানানো হয়।
দেশে ২০ লাখ হেক্টর জমি লবণাক্ত
কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক এই সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন।
তিনি বলেন, দেশে ২০ লাখ হেক্টর লবণাক্ত জমি রয়েছে।
এ সকল জমিতে বছরে কেবল মাত্র একটি ফসল হয়।
খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করতে ও ভবিষ্যতে খাদ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এই একটি ফসল ফলানো থেকে বের হতে হয়।
সেকারণে সরকার লবণাক্ত, হাওরসহ প্রতিকূল এলাকায় বছরে দু-তিনটি ফসল উৎপাদনে গুরুত্ব দিচ্ছে।
তাই পূর্ণাঙ্গ ধানের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন এর কারণে প্রতিকূল পরিবেশ–সহিষ্ণু ধানের ফলন সহজ থেকে সহজতর হবে।
কৃষিবিজ্ঞানীরা সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিনা ও বাকৃবির যৌথ গবেষণায় এ জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচিত হয়।
প্রথমে বিভিন্ন মাত্রার গামা রেডিয়েশন প্রয়োগ করে অর্ধলক্ষাধিক মিউট্যান্ট(Mutant) সৃষ্টি করা হয়।
এরপর সেগুলো থেকে নানামুখী পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হয়।
এরপর রূপান্তরিত কোষগুলো যাচাই–বাছাই করে (এমজি জেনারেশনে) তিনটি উন্নত মিউট্যান্ট শনাক্ত করা হয়।
এতে যে মিউট্যান্টগুলো পাওয়া যায় তা মাতৃগাছের জাতের চেয়ে উন্নত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হয়েছে দেখা যায়।
এ ছাড়া নতুন জাতটি ৮ ডিএস/এম এবং ১৫ দিন জলমগ্নতা সহ্য করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় নিয়মিত দূর্যোগ দেখা যায়।
আকস্মিক বন্যা ও লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় ধান চাষ ব্যাহত হচ্ছে।
লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা সহিষ্ণু ধানের উন্নত জাত উদ্ভাবন এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কার্যকর উপায় হতে পারে।
প্রায় এক দশক ধরে মির্জা মোফাজ্জল ইসলামের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী এ লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন।
এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিনার মহাপরিচালক মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফুল হাসান, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর প্রমুখ।