Monday, 17 November, 2025

সূর্যমুখী ফুলের ব্যাপক চাষ, দর্শনার্থীদের কারণে বাগানের ক্ষতি


দর্শনার্থীদের কারণে বাগানের ক্ষতি হচ্ছে

সূর্যমুখী ফুলের ব্যাপক চাষ হয়েছে ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলায়। এ ফুলের বাগান দেখতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসেন। উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামে এ বাগান। তবে এত দর্শনার্থীদের কারণে বাগানের ক্ষতি হচ্ছে। প্রায়ই  অসতর্কতা বশত তাদের পায়ের নিচে পড়ে মারা পড়েছে অনেক গাছ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন দর্শনার্থীদের কারণে বাগানের ক্ষতি এমন ভাবে হতে থাকলে তাদের আনাগোনা বন্ধ করে দেয়া হবে।

ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা

দর্শনার্থীদের এমন অসতর্কতার ঘটনায় ব্যাপক ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা।

আরো পড়ুন
ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশের চিংড়ি রপ্তানি: সংকটের পর আশা!

টানা দুই বছর নিম্নমুখী থাকার পর অবশেষে দেশের হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে। একসময় প্রায় খাদের কিনারায় Read more

পেঁয়াজের বাজারে ফের অস্থিরতা: সপ্তাহেই দাম বাড়লো ২০-২৫ টাকা
পেঁয়াজের দামে হঠাৎ মৌসুম শেষের অস্থিরতা

চলতি বছর দেশীয় পেঁয়াজ প্রায় পুরোটা সময়ই বাজারের চাহিদা মিটিয়েছে। তবে প্রতিবারের মতো এবারও পেঁয়াজ মৌসুমের শেষ সময়ে এসে বাজারে Read more

সরেজমিনে এলাকার কয়েকটি ক্ষেতে ঘুরে এ অবস্থা দেখা যায়।

ক্ষেতের সূর্যমুখীর ফুলগুলো অনেক বড় হয়েছে।

রোদের দিকে মুখে করে হলুদ ফুলগুলো উজ্জ্বল হাসি হাসছে।

তবে বর্তমানে বেশীরভাগ ফুলের পাপড়িই ঝরে গিয়ে তাতে বীজ এসেছে।

এরকম অবস্থার মধ্যেই কিছুক্ষণ পর পর নানা বয়সী দর্শনার্থী আসছে।

বাগানে ঢুকেই তারা ব্যস্ত হয়ে পড়েন ছবি তুলতে।

প্রযুক্তির বাজে দিকের ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তরুণ দর্শনার্থীরা এ সকল ক্ষেতে অবাধে এবং কোনরূপ তোয়াক্কা করা ছাড়াই বিচরণ করছে।

ক্ষেতে ঢুকে হৈ-হুল্লোড় করায় তাদের অসাবধানতায় অনেক গাছ ভেঙে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে।

কিন্তু চলমান প্রযুক্তির কুফলের কারণে সেদিকে তাদের যেন কোনো হুশই নেই।

ফারুক হোসেন নামে এক দর্শনার্থী জানান ছয়জন বন্ধু মিলে নান্দাইল থেকে এখানে ঘুরতে আসেন তারা।

ফুলগুলোতে অনেকে হাতাহাতি ও নাড়ানাড়ি করার কারণে দৃষ্টিনন্দন ফুলগুলো নেতিয়ে পড়েছে।

দূর থেকে আসায় কৃষকরা সাধারণত তাদের বাধা দেন না।

দর্শনার্থীদের এমন আচরণে সূর্যমুখী বাগানের মালিকরা খুবই মর্মাহত।

তারা বলেন, অনেক দূর থেকে দর্শনার্থীরা কষ্ট করে আসেন।

বাগানে প্রবেশে বাধা দিলে তারা কষ্ট পাবেন বিধায় কাউকে বাধা দেয়া হয়না।

কিন্তু তার বীপরিতে তাদের এমন আচরণ খুবই দুঃখজনক।

উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মুক্তাদির হাসান।

তিনি জানান, সূর্যমুখীর প্রতিটি গাছে ৫০০ থেকে ৬৫০টি বীজ পাওয়া যায়।

এক একর জমিতে সূর্যমুখীর চাষে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়।

অন্যদিকে সেখানে বীজ উৎপাদন হয় প্রায় এক টন।

বর্তমান বাজার দরে এক টন বীজ ৮৫ থেকে ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করা সম্ভব।

আবার একই সাথে সূর্যমুখীর গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

এ কর্মকর্তা বাগান পরিদর্শন করেছেন বলেও জানান।

বাগানের বর্তমান অবস্থা দেখে তিনি কিছুটা শংকিত বোধ করেন তাই কিছুদিন বাগানের ভেতর দর্শনার্থী নিষেধের পরামর্শ দিয়েছেন চাষিদের।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের উপপরিচালক মো. মতিউজ্জামান।

তিনি বলেন, জেলায় সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে ২১ হেক্টর জমিতে।

এর মধ্যে গৌরীপুর উপজেলায় মাত্র ২ হেক্টর জমিতে এর চাষ হয়েছে।

0 comments on “সূর্যমুখী ফুলের ব্যাপক চাষ, দর্শনার্থীদের কারণে বাগানের ক্ষতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ