Thursday, 21 November, 2024

সর্বাধিক পঠিত

শামুক কুড়িয়ে বাড়তি উপার্জন, হবে জীববৈচিত্র্য রক্ষা


চলনবিল, বিল গাজনা, বিল গ্যারকা, ঘুঘুদহ বিল অধ্যুষিত পাবনার বিভিন্ন এলাকা। এ এলাকার অন্তত ১০ হাজার মানুষ শামুক কুড়িয়ে বাড়তি উপার্জন করছেন। বর্ষা মৌসুমে কর্মহীন থাকায় তারা এ কাজের মাধ্যমে কিছু আয়ের মুখ দেখছেন।

তাদের কুড়ানো শামুক যাচ্ছে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন চিংড়িঘেরে।

জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, শামুকের প্রাচুর্য রয়েছে বিল এলাকা বলে পাবনায়।

আরো পড়ুন
দেশীয় পাট বীজ উৎপাদনে চমক দেখালেন কৃষক মুক্তার

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার কৃষক মুক্তার হোসেন মোল্যা দেশীয় পাট বীজ উৎপাদনে উদ্ভাবনী সাফল্য দেখিয়েছেন। সালথা উপজেলা পাট উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত Read more

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে
স্বস্তি নেই সবজির বাজারে

রাজধানীর বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। একদিকে কিছু পণ্যের দাম কমলেও অন্যান্য অনেক পণ্যের দাম স্থিতিশীল Read more

শামুক ব্যবহার হয় মাছ বা হাঁসের খাদ্য হিসেবে।

তবে পরিমিত পরিমাণে শামুক সংগ্রহ করা উচিত যেন জীববৈচিত্র্য রক্ষা হয়।

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার শামুক ব্যবসায়ীদের মহাজন খান মাহমুদপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মজিদ।

তিনি জানান, তিনি ২৫ বছর ধরে ব্যবসা করছেন শামুকের।

খুলনা থেকে চিংড়িঘের মালিকরা এসে ২৫ বছর আগে তাদের সাথে চুক্তি করেছিলেন।

তিনি জানান মৌসুমি ব্যবসা করে আসছেন তখন থেকেই।

এখন তিনি শামুক কিনে বিভিন্ন চিংড়িঘেরে পাঠান প্রতি মাসে এক থেকে দেড় লাখ টাকার।

তিনি আরও জানান, তার মতো মহাজনের পাশাপাশি পাবনার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ৪০০ ফরিয়া ব্যবসায়ী রয়েছেন।

ফরিয়ারা তাদের কাছে শামুক সংগ্রহ করে বিক্রি করেন।

তিনি জানান ফরিয়াদের অধীনে অন্তত ১০ হাজার লোক শামুক কুড়ায় বলে।

তিনি আরো জানান, পাবনা থেকে পাঁচ মাসে অন্তত ৫ থেকে ৬ কোটি টাকার শামুক সরবরাহ হয়।

শামুকের আকারভেদে প্রতি বস্তা ২৫০-৩৫০ টাকায় কেনা হয়। সকল খরচ বাদ দিয়ে তাদের বস্তাপ্রতি ২০-৩০ টাকা লাভ থাকে।

শামুক আষাঢ় মাস থেকে শুরু করে কার্তিক মাস পর্যন্ত শামুক কুড়ানো ও সরবরাহ চালু থাকে।

সংগ্রহকারীরা সারাদিন শামুক কুড়িয়ে ফরিয়াদের কাছে বিক্রি করেন।

ঈশ্বরদীর শামুক ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম। তিনি জানান, ঈশ্বরদীর আড়ত থেকে কিনে তারা সেই শামুক খুলনা অঞ্চলে নিয়ে বিক্রি করেন।

প্রতি বস্তায় লাভ থাকে ২০-৩০ টাকা।

একজন শামুক কুড়ানো শ্রমিকও গড়ে ৪০০-৫০০ টাকার শামুক কুড়াতে পারেন প্রতিদিন।

প্রতিদিন কয়েকশ বস্তা শামুক তাদের কাছে বিক্রি করেন ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজন।

এসব এলাকার বহু মানুষ তাদের মৌসুমি পেশা হিসেবে শামুক কুড়ানোকে বেছে নিয়েছেন।

পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তোজাম্মেল হোসেন।

তিনি বলেন, উন্মুক্ত জলাশয়ে বংশ বিস্তার করে থাকে শামুক ও ঝিনুক।

জলাশয়ের পানি বিশুদ্ধকরণের কাজ করে তারা নোংরা পানির পোকামাকড় খেয়ে।

শামুক এবং ঝিনুক চাষির বন্ধু বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এ প্রাণীটি আমাদের নীরবেই উপকার করছে।

বর্ষার শেষে পানি কমার সাথে সাথে এদের বেশিরভাগ মারা যায়।

তখন শামুক এবং ঝিনুক কৃষি জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

পাবনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ।

তিনি বলেন, বিল অধ্যুষিত জেলা পাবনা।

প্রচুর শামুক ঝিনুক হয় এ জেলায়।

শামুক যেহেতু পরিবেশ ও কৃষিবান্ধব।

তাই শামুক সংগ্রহে সবার সতর্ক থাকা দরকার।

0 comments on “শামুক কুড়িয়ে বাড়তি উপার্জন, হবে জীববৈচিত্র্য রক্ষা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা